হাম্মাস কী? এটি স্বাস্থ্যকর না-কি অস্বাস্থ্যকর?
হাম্মাস মধ্যপ্রাচ্যের একটি জনপ্রিয় খাবার। এটি প্রস্তুত হয় ছোলা বা মটরশুটি, অলিভ অয়েল, লেবুর রস, সামুদ্রিক লবণ, রসুন এবং তিল বীজের পেস্ট মিশ্রণে। খাবারটি মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও গ্রিস, তুরস্ক, সিরিয়া এবং ইসরায়েলেও অত্যন্ত জনপ্রিয়। এটি অন্য উপকরণ সহযোগেও প্রস্তুত করা যায় যা দেখলে মুখে জল আসবে।
হাম্মাস বহুমুখী পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি খাবার। এতে রয়েছে প্রচুর স্বাস্থ্যগুণ। এটি ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, অ্যানিমিয়া, প্রদাহজনিত রোগ, হৃদরোগ এবং হাইপারটেনশনসহ নানা রোগের চিকিৎসায় কার্যকরী।
এখানে হাম্মাসের কিছু স্বাস্থ্য সুবিধা উল্লেখ করা হলো :
১। হাঁড় ও পেশি শক্তিশালী করে
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার হাম্মাস আমাদের শরীরের হাঁড় ও পেশিকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি হাঁড়ের গঠনে প্রয়োজনীয় খনিজগুলোরও একটি চমৎকার উৎস যেমন ক্যালসিয়াম, দস্তা, তামা, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম এবং সেলেনিয়াম। প্রতিদিন দুপুরের খাবারে আপনিও এটি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
২। কোলেস্টেরল কমায়
হাম্মাস প্রস্তুতের জন্য একটি প্রধান উপাদান ছোলা বা মটরশুটি। এতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি যা কোলেস্টেরলের গ্রহণযোগ্য স্তর বজায় রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এটি কম ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে।
৩। রক্তে শর্করা মাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করে
প্রচুর প্রোটিন থাকার জন্য হাম্মাস দীর্ঘ সময়ের জন্য আপনাকে পূর্ণ রাখবে। এটি ক্ষুধা মোকাবিলায় সহায়তা করে এবং চিনির ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাস করে। এটি রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে।
৪। অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া হ্রাস করে
গ্লুটেন, বাদাম এবং দুগ্ধজাত উপাদান না থাকায় হাম্মাস অ্যালার্জি রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জন্য একটি নিরাপদ বিকল্প।
৫। অ্যানার্জি মাত্রার উন্নতি ঘটায়
হাম্মাসের উপাদান ছোলা বা মটরশুটিতে যে শ্বেতসার থাকে তা একটি জটিল কার্বোহাইড্রেট যা শরীরে শক্তি উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। শ্বেতসারে গ্লুকোজ নামের প্রাকৃতিক শর্করা থাকে যা খাওয়ার পর ভাঙতে সময় লাগে এবং শরীরে প্রয়োজনীয় ক্রিয়ার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়।
৬। ওজন পরিচালনা করে
হাম্মাসে প্রোটিন সামগ্রী উপস্থিত থাকার ফলে আপনি তৃপ্ত থাকবেন এবং এটি আপনার ক্ষুধার যন্ত্রণাকে প্রশমিত করবে। যে তিল বীজের পেস্ট (তাহিনি নামে পরিচিত) দিয়ে এটি প্রস্তুত হয় তাতে প্রচুর পরিমাণে অর্গানিক উপাদান থাকে যা পেটের চর্বি হ্রাসে সহায়তা করে। ফলে ওজন কমে।
৭। ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
হাম্মাসে রয়েছে ফাইটিক অ্যাসিড এবং স্যাপোনিনের মতো যৌগ যা ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রতিরোধে সহায়তা করে। এটি মলাশয়ে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে যা হজম ক্রিয়াকে সুসম্পন্ন করে।
৮। অ্যানিমিয়ার ঝুঁকি কমায়
হাম্মাসের উপাদান ছোলা বা মটরশুটি আয়রনের একটি চমৎকার উৎস। এটি শরীরের লাল রক্ত কোষে অক্সিজেন সরবরাহে সহায়তা করে। আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় হাম্মাস অন্তর্ভুক্ত করলে তা আয়রন ঘাটতি পূরণ করবে এবং ভূমিকা রাখবে অ্যানিমিয়া প্রতিরোধে।