যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) ক্যাম্পাস থেকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সযোগে গত বিশ মাসে ২১ জন রোগী হাসপাতালে বহন করা হয়েছে।
অ্যাম্বুলেন্সে এই রোগী বহনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ৮ হাজার ৯১৫ লিটার তেল বাবদ ৫ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭ টাকা খরচ হয়েছে। এত সীমিতসংখ্যক রোগী বহনে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি খরচ হওয়ার কথা নয়।
যদিও প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা বলছেন, অফিস চলাকালে রোগী পরিবহনের সংখ্যা এটি। এর বাইরের হিসাব পরিবহন দফতর দিতে পারবে। তবে পরিবহন প্রশাসক ড. সিরাজুল ইসলাম বলেন, রোগীর সংখ্যা আমাদের সংরক্ষণ থাকে না। অ্যাম্বুলেন্স কোথায়, কত দূরত্বে গেল, সেই হিসাব থাকে।
১১ সেপ্টেম্বর তথ্য অধিকার আইনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে আবেদন করেন এই প্রতিবেদক।
আবেদনের ভিত্তিতে ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. দীপক কুমার মণ্ডল ও পরিবহন প্রশাসক ড. সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠিতে তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে।
প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তার সরবরাহকৃত তথ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের আগস্ট মাস (বিশ মাস) পর্যন্ত অফিস চলাকালে ২১ জন রোগীকে ক্যাম্পাস থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, অ্যাম্বুলেন্সটি বর্তমানে পরিবহন পুলের নিয়ন্ত্রণাধীন আছে। অফিস টাইমের বাইরে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা চিকিৎসা কাজে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতে চাইলে পরিবহন দফতরের অনুমতিসাপেক্ষে করে থাকে, যার হিসাব ওই দফতরে সংরক্ষিত আছে।
এদিকে পরিবহন প্রশাসক ড. সিরাজুল ইসলামের সরবরাহকৃত তথ্যে উল্লেখ করা হয়, ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি আগস্ট মাস পর্যন্ত (বিশ মাস) অ্যাম্বুলেন্সে জ্বালানি বাবদ ৮ হাজার ৯১৫ লিটার তেল খরচ হয়।
যার মূল্য ৫ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ হাজার ২০৫ লিটার তেল বাবদ ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৮৪৬ টাকা খরচ হয়েছে।
আর ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত আট মাসে ৩ হাজার ৭১০ লিটার তেল বাবদ ২ লাখ ৪১ হাজার ৫২১ টাকা খরচ হয়েছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সটি রোগী পরিবহনের পরিবর্তে অন্য কাজে ব্যবহার করা হয় বেশি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যথাযথ মনিটরিংয়ের অভাবে দিনের পর দিন কতিপয় শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন। এতে জ্বালানি খরচ বেড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম হলেও বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর আবুল হোসেন বলেন, অ্যাম্বুলেন্সের জ্বালানি খরচ অস্বাভাবিক। তবে এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।