মিসরের স্ফিংসের কথা কে না জানে! সুবিশাল সিংহের দেহ এবং মানুষের মাথার স্ফিংস মিসরে একটি রয়েছে- এমনটাই সবাই জানত। কিন্তু এবার সন্ধান মিলল দ্বিতীয় স্ফিংসের।
এতদিনের পরিচিত প্রায় চার হাজার বছরের পুরনো স্ফিংসটি প্রায় ২০০ ফুট লম্বা ও ৬৫ ফুট উঁচু। সুবিশাল ভাস্কর্যটি লক্ষ লক্ষ লোককে টেনে নিয়ে যায় মিসরের গিজা উপত্যকায়। এতদিন পর্যন্ত আমরা জেনে এসেছি মিসরের এই অতিকায় স্ফিংস একটাই আছে। কিন্তু সম্প্রতি জানা গেছে, স্ফিংস নাকি আরেকটা আছে, এমনই অতিকায়, এমনই সুবিপুল। গবেষকরা বলছেন, সেটা গিজা উপত্যকার বর্তমান স্ফিংসের আশপাশেই বালুচাপা পড়ে আছে।
সম্প্রতি মিসরে রাস্তা নির্মাণ করতে গিয়ে নির্মাণ শ্রমিকরা মাটির নিচে কিছু একটার সন্ধান পান। সেখানে আরো অনুসন্ধান করেন বিশেষজ্ঞরা। এর পরেই সন্ধান মিলে দ্বিতীয় স্ফিংসের।
এর আগেই অবশ্য দ্বিতীয় সেই স্ফিংসের দাবি করেছিলেন দুই ব্রিটিশ ঐতিহাসিক গ্যারি ক্যানন আর ম্যালকম হুটোন। তাদের দাবি দুটি যুক্তিতে ছিল- প্রথমত, প্রাচীন মিসর এবং গ্রীসের বহু ভবন, দুর্গ এবং সমাধিস্থলে স্ফিংস এর ছোটখাট ভাস্কর্য আর চিত্র পাওয়া গিয়েছে। এসব ভাস্কর্য বা চিত্রতে স্ফিংস সবসময়ই জোড়ায় জোড়ায় ছিল। ফলে দ্বিতীয় স্ফিংস কোথাও রয়েছে লোকচক্ষুর অন্তরালে।
গবেষকদের দ্বিতীয় যুক্তি ছিল,মিসরীয় পুরাণ মতে, স্ফিংস প্রকৃতি ও জীবনের দ্বৈতসত্ত্বাকে উপস্থাপন করে। পুরুষ ও নারী, চাঁদ ও সূর্য; এমন সব দ্বৈতসত্তাকে স্ফিংস এর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। প্রাচীন মিসরীয়রা বিশ্বাস করত, প্রতিদিন সূর্য দিন শেষে বিশ্রাম করতে যায় এবং চাঁদ তার কাজ শুরু করে। সে হিসাবে চাঁদ ও সূর্যকে দুটি আলাদা স্ফিংস পাহারা দেয়। তবে সেই তাত্ত্বিক কথার প্রমাণ সম্প্রতি মিলেছে। কিংস ভ্যালি খ্যাত উপত্যকা থেকে ছয় মাইল দূরে সন্ধান মিলেছে সেই স্ফিংসের।
গবেষকদের অনুমান যদি সত্য হয় তাহলে এই স্ফিংসটি আড়াই হাজার থেকে চার হাজার বছরের পুরনো। এখনো স্ফিংসটিতে খননকার্য সেভাবে করা হয়নি। এমনকি কোনো ছবিও প্রকাশিত হয়নি। তবে কিছু পর্যটক ইতোমধ্যেই এ স্থানটি ভ্রমণ শুরু করেছেন।
বর্তমানে সে স্থানে খননের জন্য ১০ মিলিয়ন ডলারের একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পেই স্ফিংসটি খনন করে শীঘ্রই বিশ্ববাসির সামনে উপস্থাপন করা হবে।