পিতা-পুত্রের যৌথ উদ্যোগে এ বার রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলের রণনীতি তৈরি হবে। প্রতিযোগিতা চলাকালীন সময়ে সেই রণনীতি অন্য মাত্রা পাবে। ব্রাজিলের কোচ তিতের ছেলে মাতেউস রিৎজি বাসি প্রতিটি খেলা দেখবেন স্টেডিয়ামের উপরের দিকে কোনো একটা জায়গায় বসে। সেখান থেকে তিনি তার বাবাকে ম্যাচের নানা ছবি ও সেই সংক্রান্ত তথ্য পাঠাবেন একটি ট্যাবলেটের মাধ্যমে। সেই সমস্ত তথ্য অনুযায়ী তিতে কখনও নীতি নির্ধারণ করবেন, কখনও বা সংশ্লিষ্ট ফুটবলারকে তার ভুল বের করবেন।
অভিনব এই পদ্ধতির প্রয়োগ ফিফার অনুমতি নিয়েই করা হচ্ছে। তবে একেবারে স্টেডিয়ামের উপর থেকে যে ম্যাচের বিশ্লেষণ করা হবে এটা তিতের মাথা থেকেই এসেছে। তিনি তার ছেলের ব্যবহারের জন্য একেবারে নতুন ধরনের একটি টেবিলও তৈরি করিয়েছেন। সেখান থেকে সম্পূর্ণ নতুন সব কোণ থেকে ম্যাচের বিভিন্ন ঘটনার ছবি নেওয়া হবে। যা পুরোটাই পরিচালনা করবেন তিতের ছেলে বাসি। তার উপর প্রধান দায়িত্ব, মাঠের ধারে দাঁড়িয়ে থেকে যে সমস্ত দুরূহ কোণের পরিস্থিতি বোঝা সম্ভব নয়, সেগুলো দৃশ্যবন্দি করে নেওয়া।
বিশ্বকাপে এমন অভিনব পদ্ধতি প্রয়োগের মহড়া দিয়েছেন তিতের ছেলে। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে অ্যানফিল্ডের উপরের দিকে এক জায়গায় বসে তথ্য ও ছবি পাঠিয়ে গিয়েছেন তিতেকে। ব্রাজিলের একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, ছেলের কাজে নাকি দারুণ খুশি বাবা। ম্যাচের সময় দেখা গিয়েছে স্টেডিয়ামের একেবারে উপরের দিকে একটা জায়গায় রেডিয়োলিঙ্কের সাহায্যে সরাসরি তিতের টেকনিক্যাল দলের আর এক সদস্য ক্ল্যাবের জাভিয়েকে তিনি তথ্য পাঠাচ্ছেন। সেখান থেকে তথ্য বাছাই করে তিতের কাছে পাঠানো হচ্ছে।
ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে রেডিয়ো লিঙ্কার নিয়ে কাজ করলেও বিশ্বকাপের সময় তিতের ছেলের কাছে থাকবে দুটি ট্যাবলেট। যার একটি নিয়ে উপরে বসবেন বাসি। অন্যটি থাকবে সম্ভবত ক্ল্যাবের কাছেই। এই ট্যাবলেট ব্রাজিলের টেকনিক্যাল দলকে দেবে ফিফাই। শুধু ব্রাজিল নয়। পাবে অংশগ্রহণকারী ৩২টি দেশই। ট্যাবলেটের মধ্যে পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করার ব্যবস্থা থাকবে। মোদ্দা কথা, পুরো ব্যাপারটাই রণনীতি সংক্রান্ত। সঙ্গে কোনো ফুটবলারের ভুল পাস করার মতো ঘটনা ঘটলেও তার কারণ বের হয়ে যাবে সেই ছোট্ট ট্যাবলেটে।
অবশ্য এমন নয় যে এটা পুরোপুরি একটা নতুন ভাবনা। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এই ধরনের যন্ত্রের ব্যবহার আগেই চালু হয়েছে। তবে এত দিন তা বিরতির সময়ে কোচেরা কাজে লাগিয়েছেন গোপনে লকাররুমে বসে। বায়ার্ন মিউনিখের কোচ থাকার সময় পেপ গার্দিওলা এই যন্ত্রের সাহায্য নিতেন। কিন্তু তিতের আগে অন্য কেউ মাঠে খেলা চলার সময় এর সাহায্য নিয়েছেন বলে শোনা যায়নি। এমন অভিনব ভাবে এর ব্যবহার আগে কেউ করেননি। প্রায় আকাশ থেকে ম্যাচের মুহূর্তকে নিখুঁত ভাবে তুলে ধরার ভাবনা নিঃসন্দেহে বৈপ্লবিক।