ভারত সফর থেকে ফিরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ঢাকায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, তিনি ভারতকে যা দিয়েছেন সেটি তারা চিরকাল মনে রাখবে এবং তিনি প্রতিদানের আশায় কিছু করেননি।
বাংলাদেশে অনেকেই মনে করেন, শেখ হাসিনা সরকার ট্রানজিট থেকে শুরু করে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের হস্তান্তর ইত্যাদি নানান বিষয়ে দিল্লিকে সাহায্য করেছে; কিন্তু বিনিময়ে বাংলাদেশ ততটা পায়নি।
এক্ষেত্রে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গিটা কী? তারা কি মনে করে যে শেখ হাসিনা সরকারকে ভারত যথেষ্ট প্রতিদান দিয়েছে?
দিল্লির থিংক ট্যাঙ্ক ইন্সটিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালিসিসের গবেষক ড. স্ম্রুতি পাটনায়েক মনে করেন এ সম্পর্কটিকে দীর্ঘমেয়াদে দেখতে হবে।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনের জন্য শেখ হাসিনার সরকার ভারতকে সর্বাত্মক সহায়তা করেছে।
ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা, যারা বাংলাদেশের ভেতরে লুকিয়ে ছিল, তাদের ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী।
বাংলাদেশ সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপের কারণে ভারতরে উত্তর-পূর্বাঞ্চল এখন আগের তুলনায় অনেকটাই স্থিতিশীল।
ড. স্ম্রুতি পাটনায়েক মনে করেন, শেখ হাসিনা তার বক্তব্যের মাধ্যমে হয়তো সে বিষয়টি বোঝাতে চেয়েছেন।
তিনি বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক শুধু একটিমাত্র বিষয়ের উপর নির্ভর করে না। প্রতিটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কতগুলো দিক আছে।
ভারতে স্থিতিশীলতা থাকলে বাংলাদেশেও স্থিতিশীলতা থাকবে বলে তিনি মনে করেন।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে স্থিতিশীলতা আনার জন্য বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে উল্লেখ করেন স্ম্রুতি পাটনায়েক।
সেটির প্রভাব বাংলাদেশের উপরও থাকবে বলে তিনি মনে করেন।
তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি বিষয়ে ভারত প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটি এখনো বাস্তবায়ন করতে পারেনি। এনিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে হতাশা আছে।
তিস্তা ইস্যু বাদ দিলেও দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অনেক অগ্রগতি হয়েছে।
মিস পাটনায়েক বলেন, ‘আমি এটা বলবো না যে ইন্ডিয়া বেশি লাভ পেয়েছে আর বাংলাদেশ কম লাভ পেয়েছে। এভাবে কোন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক হয় না।’
মিস পাটনায়েক বলেন, বিষয়টা এ রকম নয় যে, ভারতের লাভ হলে বাংলাদেশের ক্ষতি হবে কিংবা বাংলাদেশের লাভ হলে ভারতের ক্ষতি হবে। বিষয়টিকে সেভাবে দেখার সুযোগ নেই।
বর্তমানে দুদেশের সম্পর্ক যে অবস্থায় আছে সেটি ‘উইন-উইন সিচুয়েশন’ বা উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশের ভেতরে অনেকে মনে করে, একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ ভারতের জন্য অনেক প্রয়োজন।
কারণ বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ভারতকেও স্থিতিশীল রাখবে বলে তাদের ধারণা।