বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ, তার সঙ্গে সরকার ন্যূনতম মানবিক আচরণ করছে না বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিয়ে তার সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির এ নেতা।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন ফখরুল।
এ সময় গণতন্ত্র ও খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দেয়ার দাবিও জানান মির্জা ফখরুল।
এর আগে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল থেকেই বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল স্বেচ্ছাসেবক দলসহ সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী মাজারে মিছিল নিয়ে জড়ো হন। বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তারা।
মির্জা ফখরুল বলেন, একটা কথা আমরা বলে আসছি- এই দেশে গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে আগামী দিনে যে নির্বাচন হবে সেই নির্বাচন অবশ্যই একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে।
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে বিএনপি। সকাল ৬টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। সকাল থেকে নেতাকর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেন।
এ ছাড়া ড্যাবের উদ্যোগে সকাল থেকে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে।
দিবসটি পালনের জন্য বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে এ বছর ১০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির উদ্যোগে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
জিয়ার মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রতি বছর রাজধানীতে গরিবদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। কিন্তু এবার খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় তা সীমিত আকারে পালন করা হচ্ছে।
জিয়ার কবর জিয়ারতের পর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গরিবদের মাঝে ইফতারসামগ্রী, খাবার ও কাপড় বিতরণ করেন।
শেরেবাংলা নগর টিঅ্যান্ডটি মাঠ, মোহাম্মদপুর টাউন হল, ধানমণ্ডির সুগন্ধা কমিউনিটি সেন্টার এবং কলাবাগান বাসস্ট্যান্ডে এসব বিতরণ করা হবে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেনাবাহিনীর একাংশের অভ্যুত্থানে নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন।
একই বছর ৭ নভেম্বর সিপাহি জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসেন।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
১৯৮১ সালের ৩০ মে ভোরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বিপদগামী কিছু সেনাসদস্যের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন তিনি।