অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগসহ বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির মামলার তদন্তে আবদুল হাই বাচ্চুকে পঞ্চম দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তদারকি কর্মকর্তা ও টিম প্রধান সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এর আগে গত ১৫ মে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দুদকে হাজির না হয়ে দুই মাসের সময় চেয়েছিলেন বেসিক ব্যাংকের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চু। তবে দুই মাস সময় না দিয়ে আজ হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ দিয়েছিলেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও উপপরিচালক শামসুল আলম।
আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বেসিক ব্যাংকের এই প্রাক্তন চেয়ারম্যানের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা (উপপরিচালক) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত ৬ মার্চ চতুর্থ দফায় বেসিক ব্যাংকের প্রাক্তন এই চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। প্রথম দুইবারের জিজ্ঞাসাবাদে শেষে অভিযোগে অস্বীকার করেন তিনি। গত ৮ জানুয়ারি তৃতীয় দফায়, ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় ও ৪ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় ২০১৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর তিন দিনে টানা ৫৬টি মামলা করেন দুদকের অনুসন্ধান দলের সদস্যরা। রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় এসব মামলায় আসামি করা হয় ১৫৬ জনকে। অনিয়মের মাধ্যমে ২ হাজার ৬৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। এর মধ্যে রাজধানীর গুলশান শাখায় ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা, শান্তিনগর শাখায় ৩৮৭ কোটি টাকা, প্রধান শাখায় প্রায় ২৪৮ কোটি টাকা এবং দিলকুশা শাখায় ১৩০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। অভিযোগের বাকি অংশের অনুসন্ধান দুদকে চলমান।
মামলায় আসামিদের মধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা আছেন ২৬ জন। বাকি ১৩০ আসামি ঋণগ্রহীতা ৫৪ প্রতিষ্ঠানের মালিক ও সার্ভে প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকার ও ঋণগ্রহীতাদের অনেকেই একাধিক মামলায় আসামি হয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাংকের প্রাক্তন এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে ৪৮টি মামলায়। সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া ডিএমডি ফজলুস সোবহান ৪৭টি, কনক কুমার পুরকায়স্থ ২৩টি, মো. সেলিম আটটি, বরখাস্ত হওয়া ডিএমডি এ মোনায়েম খান ৩৫টি মামলার আসামি। তবে কোনো মামলায় ব্যাংকের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুসহ পরিচালনা পর্ষদের কাউকে আসামি করা হয়নি। এ ছাড়া বেসিক ব্যাংকসংক্রান্ত বিষয়ে আরো চারটি মামলা করে দুদক।