ব্রাজিলের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি দ্বীপ ফার্নান্দো দে নরোনহা। সেখানকার মানুষ দ্বীপে একটি শিশুর জন্মের পর ব্যাপক উৎসব করছেন।কারণ বারো বছর পর প্রথম কোনো শিশুর জন্ম হলো ওই দ্বীপে।
শহরটির বাসিন্দা মাত্র তিন হাজার। তবে দ্বীপটি ভিন্ন একটি কারণে আগে থেকেই পরিচিত ছিল। সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক জীব-বৈচিত্র্যের কারণে দ্বীপটি ২০০১ সাল থেকে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় রয়েছে। বিরল উদ্ভিদ আর জীবজন্তু সমৃদ্ধ দ্বীপটি একটি সংরক্ষিত অঞ্চল।
যাই হোক ফিরে আসা যাক শিশুটির কথায়। দ্বীপটিতে সন্তান প্রসব নিষিদ্ধ থাকায় এতদিন দ্বীপটির ভূখণ্ডে কোন শিশুর জন্ম হয়নি। সেখানে হঠাৎ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ২২ বছর বয়সী এক নারী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই নারী বলেন, তিনি জানতেনই না যে তিনি গর্ভবতী। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ খুব পেট ব্যথা করছিল। টয়লেটে যাওয়ার পর দেখি দুই পায়ের মাঝখান দিয়ে কি যেন একটা বের হচ্ছে।’ এরপর শিশুটির বাবা এসে উদ্ধার করলেন এই নারীকে। তিনি জন্ম দিয়েছেন একটি কন্যা শিশুর।
ওই নারীর পরিবারও জানালো গর্ভধারণ সম্পর্কে তাদের অজ্ঞতার কথা। এই সন্তানের জন্ম দিয়ে তিনি এক অর্থে আইন অমান্য করেছেন। তবে তা নিয়ে কর্তৃপক্ষ বা দ্বীপের বাসিন্দা কেউই ভাবছেন না। বরং সবাই তাকে সহায়তা করছেন। শিশুর জন্য দরকারি জিনিসপত্র ও কাপড় কিনে দিচ্ছেন।
কিন্তু দ্বীপটিতে সন্তান প্রসব কেন নিষিদ্ধ।
কারণটি হলো, সেখানে একটি মাত্র হাসপাতাল এবং সেখানে মায়েদের প্রজনন স্বাস্থ্য বিভাগ নেই। তাই গর্ভবতীদের দ্বীপের বাইরের কোনো হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। কোনো ধরনের জটিলতা তৈরি হওয়ার ভয়ে সেখানে প্রসবের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
দ্বীপটি সম্পর্কে আরেকটি তথ্য হলো, এটি কোনো পৌরসভা বা প্রশাসনের অধীনে নেই যা আধুনিক বিশ্বে বিরল। তবে দ্বীপটিতে রয়েছে সুন্দর সমুদ্র সৈকত, যার অনেকগুলো বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে অতুলনীয় বলে খেতাব পেয়েছে। রয়েছে ডলফিন, তিমি, বিরল পাখি আর কচ্ছপসহ আরো নানা প্রাণির সংরক্ষণ।
এসব প্রাণী সংরক্ষণের জন্যও দ্বীপটিতে জনসংখ্যা কম রাখার ব্যাপারে সরকারি চাপ রয়েছে।