শুধু ভালো খাবার খেলেই হবে না। খেতে হবে নিয়ম ধরে। খাদ্যগ্রহণ একটা খেলার মতো। কাজেই তা কায়দা-কানুন ধরেই খেলতে হয়।
রমনাথ যখন তার পরিবার নিয়ে খাবার টেবিলে বসেন তখন সেখানে নিয়ম-নীতি মেনেই খাওয়ার কাজ সম্পন্ন হয়। ওই টেবিলে তার ছেলে আভিমানু আর মেয়ে কাশিয়াপিও এসব নিয়মে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। বেশ কিছু নিয়মের মধ্যে একটা হলো- যতক্ষণ খাদ্যগ্রহণ ততক্ষণ মোবাইল ফোন ম্পর্শও করা যাবে না। রমনাথের কথা হলো, খাবারের টেবিল মানেই পরিবারের সবার সঙ্গে কিছু ভালো সময় কাটানো। এখানে সম্পর্ক আরো বেশি দৃঢ় হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রমনাথের মতোই আমাদের খাবারের টেবিলে বিশেষ কিছু নিয়ম চালু করা উচিত। এটা কেবল বাড়ির বাচ্চাদের জন্যেই নয়, বড়দের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
বহু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং ফিটনেস এক্সপার্টদের মতে, এক সময়ের ভারতীয় উপমহাদেশের খাবার এবং তাদের হাতে খাওয়ার পদ্ধতি গোটা বিশ্বেই সুপরিচিতি পেয়েছে। কাজেও এখন আমাদের খাবার টেবিলের নিয়ম-কানুনগুলোকেও বিশ্বে সুপরিচিত করা উচিত। খাবার আসলে হাতে-মুখে খাওয়া নয়। এটা মন দিয়েও খেতে হবে। এখানে এমনই কিছু স্বাস্থ্যকর ও শান্তিদায়ক নিয়মের উদাহরণ টেনেছেন বিশেষজ্ঞরা।
১. খাবার মুখে পুরে অবশ্যই মুখ বন্ধ করে খাবেন। চাবানোর সময় যেন শব্দ না হয় সেদিকটা খেয়াল রাখতে হবে।
২. খাবারের প্লেট অবশ্যই পরিষ্কার করে নিতে হবে। হাত দিয়ে খেলে অবশ্যই হাত ধুতে হবে পরিষ্কার করে। এমনভাবে খাবেন না যেন এটাই আপনার দিনের শেষ খাবার। প্রথমেই প্লেট উপচে ভাত বা তরকারি বা অন্যকিছু নেবেন না। যতটুকুই খান না কেন প্রয়োজনে বার বার নিন।
৩. রুটি-মাখন থাকলে মাখনের ছুরিটা রুটির পাশে রাখবেন।
৪. দাঁত খোঁচানোর কাজটি আড়ালে করবেন। সবার সামনে করলে অবশ্যই অন্য হাতে মুখ ঢেকে নেবেন।
৫. হাতের ব্যাগটা কখনোই খাবারের টেবিলের ওপর রাখবেন না। বরং চেয়ার বা টেবিলের পাশে নিচে রাখুন। রেস্টুরেন্টে টেবিল বা চেয়ারে ঝুলানোর ব্যবস্থা থাকলে ঝুলিয়ে রাখুন।
৬. খাবারের টেবিলে হেলে পড়ে বা কুঁজো হয়ে বসবেন না। শিড়দাঁড়া টান টান করে বসে থাকুন। আপনার অঙ্গভঙ্গি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চামচ দিয়ে খেলে তা সরাসরি মুখ পর্যন্ত আনুন। চামচের জন্যে বেশি হেলে পড়বেন না।
৭. ন্যাপকিনটাকে দু পায়ের ওপর রাখুন। এটাকে শার্টের ওপর নেবেন না।
৮. ন্যাপকিনের ব্যবহার শেষ হলে তা একটা ভাঁজ দিয়ে টেবিলের ওপর প্লেটের বামপাশে রেখে দিন।
৯. চামচ দিয়ে খাবার শেষে চামচ এবং চাকু প্লেটের ওপর একসঙ্গে রাখুন। বলা হয়, এটা রাখতে হয়ে ঘড়িতে ১১টা বাজার কাঁটার অনুসারে।
১০. পানির গ্লাসটা কোথায় রাখবেন তা যদি বুঝতে না পারে তো ‘বিএমডাব্লিউ’ নিয়ম অনুসরণ করুন। বি মানে ব্রেড বা রুটি। এটা রাখুন বামে, মাঝে থাকবে এম বা মিলস বা মূল খাবার। আর ডাব্লিউ বা ওয়াটার অর্থাৎ পানিকে স্থান দিন ডানে।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া