দেশের রংপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলসমূহের উপর ১ নম্বর নৌ সতর্কতা সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বৃহস্পতিবার বাসসকে জানান, আগামী ৬ মে রোববার পর্যন্ত সারাদেশে বৃষ্টি ও ছোট আকারের কালবৈশাখী ঝড় অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সাথে বিজলী চমকানোসহ বজ্রপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে।
তিনি জানান, সেই সাথে দেশের অনেক অঞ্চলে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যাবে। তবে এরপর বৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ের প্রবণতা কিছুটা কমবে। ঝড় ও বৃষ্টির সাথে বিজলী চমকানোসহ বজ্রপাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, ঢাকা খুলনা, ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া এবং বিজলী চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে ভারী বর্ষণ ও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
পূর্বাভাসে বলা হয়, সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদফতর সূত্র জানায়, ঢাকায় বাতাসের গতি ও দিক দক্ষিণ/দক্ষিণ পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৮-১২ কি.মি. যা অস্থায়ী দমকায় পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪০-৫০ কি.মি. হতে পারে।
আবহাওয়া চিত্রের সংক্ষিপ্তসারে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে করছে।
ঢাকায় আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯৩ শতাংশ।
বগুড়ায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি
আবুল কালাম আজাদ, বগুড়া অফিস
বগুড়ায় গত কয়েকদিনের কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রাসারন অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বোরো মওসুমে জেলায় ১ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এতে চালের উৎপাদন ধরা হয়েছে সাড়ে ৭ লাখ মেট্রিক টন। এবার প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমন তেমন একটা না হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছিল চাষিরা। তবে ঝড় ও শিলাবৃষ্টির ফলে ফলন কমে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
গত ২৪ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত কয়েকদফা বগুড়া জেলার উপর দিয়ে কাল বৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে জেলার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, কাহালু , নন্দীগ্রাম, দুপচাঁচিয়া উপজেলার জমির বোরো ধান গাছ মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। সেই সাথে শিলাপাতে শীষের ধান চিটা হয়ে গেছে এবং মাটিতে ঝরে পড়েছে। এতে ২ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে নন্দীগ্রাম উপজেলায় ১০০ হেক্টর, কাহালুতে ৫০ হেক্টর, দুপচাঁচিয়ায় ৫০ হেক্টর , সারিয়াকান্দিতে ২ হাজার ১০ হেক্টর, সোনাতলায় ১৫৫ হেক্টর। এ ছাড়া সারিয়াকান্দিতে পাট ৪২০ হেক্টর ও সবজি ১৯০ হেক্টর।
সারিয়াকান্দি উপজেলার হাটশেরপুর এলাকার কৃষক আয়ুব হোসেন তরফদার জানান, শিলা বৃষ্টিতে তার জমির পাকা ধান অর্ধেকই ঝরে গেছে। একই ধরনের কথা বলেছেন কাহালু ইপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, ধানের অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাই ধান ঘরে না তোলা পর্যন্ত চিন্তায় আছি।
বগুড়া কৃষি সম্প্রাসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রতুল চন্দ্র জানান, ঝড় ও শিলা বৃষ্টিপাতের কারণে এবার ধানের উৎপাদন কিছু কম হবে। (২ এপ্রিল ২০১৮, প্রকাশিত সংবাদ)