বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের দেয়া আদেশে এ কথা বলা হয়েছে। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত আদেশ প্রকাশিত হয়।
এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান জানিয়েছেন, আগামি রবিবারের মধ্যে তারা আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেবেন।
৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিটি লিখেছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী। এতে একমত হয়ে প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্যরা স্বাক্ষর করেছেন। অন্য বিচারপতিরা হলেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।
গত ১৯ মার্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদককে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। দুই সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদককে এবং পরবর্তী দুই সপ্তাহের মধ্যে আসামিপক্ষকে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে এ আপিল শুনানির জন্য ৮ মে দিন ধার্য করে হাইকোর্টের দেয়া জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
প্রকাশিত আদেশে আদালত বলেছেন, জামিন দিয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। সেটা মঞ্জুর করার মতো কারণ (মেরিট) আমরা পেয়েছি। তাই দুটি আপিলের অনুমতি দেয়া হলো। এবং আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের আদেশটি স্থগিত করা হলো। আপিলকারীদের দুই সপ্তাহের মধ্যে মামলার সারসংক্ষেপ জমা দিতে বলা হলো।
এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান বলেন, আপিল বিভাগ দুই সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদককে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমরা আগামী রবিবারের (৮ এপ্রিল) মধ্যে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেব।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে হাইকোর্ট চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। পরে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে তা স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক। ওইদিন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর জামিন আদেশ স্থগিত না করে আবেদন দুটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
১৪ মার্চ চার মাসের জামিন দিয়ে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ ১৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। ওই সময়ের মধ্যে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত আপিলের আবেদন (লিভ টু আপিল) করার নির্দেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত। পরে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, লিভ টু আপিল দায়ের করে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. আক্তারুজ্জামানের আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একই আদালত খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয় আসামির সবাইকে মোট ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। এ অর্থদণ্ডের টাকা প্রত্যেককে সমান অঙ্কে প্রদান করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। রায়ের পর থেকে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া।