নিরাপরাধ মানুষের শাস্তির আশঙ্কায় ছেলে হত্যার ঘটনায় পুলিশের কাছে কোনো সন্দেহভাজনের নামও না বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলের সেই ইমাম। যার মহানুভবতায় বড় ধরনের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও দাঙ্গা থেকে বেঁচে গেছে ভারত।
তিনি বলেছেন, তিনি ছেলের হত্যাকাণ্ড দেখেননি। তাই পুলিশের সামনে কারো নামও না বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যাতে অযথাই কেউ কোনো ঝামেলায় না পড়ে। বিষয়টি পুলিশ নিজেই তদন্ত করে বের করবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।
আসানসোলের সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক ঘৃণার মারণাস্ত্রে খুন হওয়া ১৬ বছরের কিশোর পুত্রের শেষকৃত্যে প্রতিশোধের বিপরীতে মাওলানা রশিদি আহ্বান জানিয়েছেন জীবনের।
বলেছেন, ‘কোনো প্রতিহিংসা নয়। প্রতিশোধ নিতে যদি কারোর মৃত্যু ঘটাও, তাহলে আমি এই শহর ছেড়ে চলে যাবো। আমি তোমাদের সঙ্গে ৩০ বছর ধরে আছি, আমাকে যদি তোমরা ভালোবাসো তাহলে আর কাউকে যেন এভাবে মরতে না হয়।’ মাওলানার এই তৎপরতায় আপাতভাবে শান্ত হয় আসানসোল।
ছেলের হত্যা মামলার বিষয়ে মাওলানা ইমদাদুল রশিদি বলেন, ‘আমি আমার ছেলের হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী নই। আসানসোলে দাঙ্গার পর সে নিখোঁজ হয় আর আমি পুলিশের কাছে নিখোঁজ অভিযোগ করি। তার লাশ শনাক্ত করার পর পুলিশ খুনের মামলা দায়ের করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু সাক্ষী নেই তাই ছেলের খুনের কোনো সন্দেহভাজনের নাম না বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি কোনো নিরাপরাধ মানুষকে বিপদে ফেলতে দেব না। পুলিশকে তদন্ত করে দোষীকে খুঁজে বের করতে দিন।’
ইমাম রশিদি দাবি করেন, তদন্তে সহায়তা করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করায় কিছু লোক তার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করছে। তিনি বলেন, ‘তাদের গুজব ছড়াতে দিন। আমি ন্যায্য অবস্থানে আছি।’
বিজেপি’র এমপিদের দল তার সঙ্গে দেখা করেনি বলেও কোনো দুঃখ নেই ইমদাদুল রশিদির। দলটি রবিবার আসানসোলের অন্যান্য এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। তিনি বলেন, ‘তারা যদি এখানে না আসতে চায়, এটা তাদের ব্যাপার। কেউ যদি আমার সঙ্গে দেখা করতে চায় আমি দেখা করবো। কিন্তু দেখা করে কেউ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চাইলে তা করতে দেব না।’
রশিদি জানান, আসানসোলের সহকারী মেয়র ব্যতীত তৃণমূল কংগ্রেসের কোনো নেতাও এই হৃদয়বিদারক ঘটনার পর তার সঙ্গে কথা বলেননি।