জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা আরও বাড়াতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আবেদনের ওপর শুনানির জন্য বুধবার দুপুর ২টার সময় নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট।
আজ আবেদনটি কার্যতালিকায় আসার পর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে খালেদার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
এর আগে মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানির জন্য এ দিন ধার্য করেন। আদালতে আপিল শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। এর আগে ২৫ মার্চ দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করেন।
খুরশীদ আলম খান বলেন, খালেদা জিয়া ওই মামলায় মূল অপরাধী। বয়স ও সামাজিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে তার পাঁচ বছর কারাদণ্ডের যে রায় দেয়া হয়েছে, তাতে আমরা সংক্ষুব্ধ। কারণ খালেদা জিয়া এ মামলার প্রধান আসামি। একই মামলার অন্য আসামিদের যেখানে ১০ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে, সেখানে তার পাঁচ বছরের এই কারাদণ্ডের রায় আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।অন্য আসামিদের তুলনায় তার কম সাজা হওয়ায় দুদক সাজা বাড়াতে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এর আগে বিচারিক আদালতের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। পরে জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে ১২ মার্চ খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত চেয়ে পর দিন অর্থাৎ ১৩ মার্চ আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক।
পরে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত এ দুই আবেদনের শুনানির জন্য ১৪ মার্চ দিন ধার্য করেন। এর পর ওই দিন আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদককে জামিনের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে) দায়ের করতে বলে চার মাসের জামিন ১৮ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করেন। এ আদেশ অনুসারে পরের দিন ১৫ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক লিভ টু আপিল করে।
এ আপিলের ওপর ১৮ মার্চ শুনানি শেষে আদেশের জন্য পর দিন দিন ধার্য করেন আদালত। ওই দিন রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে আপিলের অনুমতি দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ। একই সঙ্গে হাইকোর্টের দেয়া জামিন ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৫-এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামানের আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একই আদালত খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয় আসামির সবাইকে মোট ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। এ অর্থ দণ্ডের টাকা প্রত্যেককে সমান অঙ্কে প্রদান করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। রায়ের পর থেকে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া।