রাজধানী এখন মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। ঘরে ঘরে ডেঙ্গু আর ম্যালারিয়ার আতঙ্কে অস্থির সবাই। কোনভাবেই মশাকে বাগে আনা সম্ভব হচ্ছে না। মশারির ভেতরে না হয় পার পেলেন। কিন্তু এর বাইরে? দিন-দুপুরে মশার আক্রমণে বিপর্যস্ত সবাই। ২০১৪ সালের ওয়ার্ল্ড ম্যালেরিয়া রিপোর্টে বলা হয়, ভারত এবং আশপাশের দেশে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ অনেক বেশি।
ওদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টে বলা হয়েছে, পৃথিবীর অর্ধেক মানুষ ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষ করে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে বিষয়টা আতংকজনক। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন বিশেষ করে শিশুদের মশা থেকে নিরাপদ রাখতে কয়েকটি পন্থার কথা। এগুলো জীবনযাপনের কিছু অভ্যাস যা সবার গড়ে তোলা উচিত। এদের চর্চায় মশা থেকে অনেকটা নিরাপদ থাকা সম্ভব।
সঠিক পোশাক এবং জুতা বাছাই
বর্ষায় শিশুদের বড় হাতার জামা পরাবেন। পা দুটোও যেন পুরোপুরি ঢাকা থাকে। বাইরে গেলে অবশ্যই জুতা থাকবে পায়ে। এতে করে দেহের বেশিরভাগ অংশে মশা কামড়াতে পারবে না। মশারা সাধারণত পায়ের নিচের দিকে বেশি কামড়ায়। তবে মনে রাখতে হবে, পোশাক সুতি ও কিছুটা ঢিলেঢালা হলে ভালো। এতে করে মশা ত্বক অবধি পৌঁছতে পারবে না।
ঘরের দরজ-জানালা বন্ধ রাখুন
এটা স্বাভাবিক বিষয়। এমনিতেই আমরা সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করি। তবে কাজটা আরেকটা আগেভাগে করতে পারলে ভালো। সন্ধ্যা ঘনালেই এ মশা আসবে তার আগে নয়, এমটা ঠিক না। সূর্য ডোবার একটু আগ দিয়েই আয়োজন শুরু করুন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি জানালায় নেটের ব্যবস্থা করতে পারেন। এখন সহজেই নেট মেলে এবং এগুলো জানালায় সহজেই লাগানো যায়। নেট লাগালে মশার আনাগোনা অনেক কমে আসবে।
পানি জমতে দেবেন না
বিশেষ করে বাড়িতে এবং এর আশপাশে বৃষ্টির পানি জমে থাকলেই সেখানে মশা হবে। কাজেই ঘরের কোথাও বাড়তি পানি জমে থাকতে দেখলেই সরিয়ে ফেলুন। নয়তো বাড়ির ভেতরেই মশার আঁতুড় ঘর তৈরি হবে। বাড়ির চারপাশটাও পরিষ্কার রাখাক দরকার।
মশা তাড়ানোর ওষুধ
এমনিতেই মশা তাড়ানো এবং বংশবিস্তার রোধ করতে এখন ফগার মেশিনের ব্যবহার দেখি আমরা। এমনিতেই মশার কয়েল, তরল ইলেকট্রিক যন্ত্র কিংবা মশা তাড়ানোর ক্রিম পাওয়া যায়। বিতর্ক রয়েছে এগুলো স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর। কিন্তু মশার অত্যাচার থেকে বাঁচতে এদের ব্যবহার থেকে নেই। যদি মনে করেন উপকার পাচ্ছেন, তবে ব্যবহার করতে পারেন।
যদি বাচ্চার আগে ম্যালেরিয়া হয়ে থাকে
শিশুটার আগে ম্যালেরিয়া হয়ে থাকলে অনেক বেশি সাবধান হতে হবে। চিকিৎসা কেবল তাকে এই রোগের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা দিয়েছে। কিন্তু পরের বার আক্রমণে যে সে আক্রান্ত হবে না এমন কোনো কথা নেই। আর দ্বিতীয়বার আক্রমণে অবস্থার অবনতি ঘটতে কতক্ষণ?
চব্বিশ ঘণ্টার ব্যবস্থা
বলা হয়, অ্যানোফিলিস মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া হয়। আর তা মানুষকে শেষ রাতের দিকেই কামড়ায়। তাই বরে যে বাকি সময়টুকু নিশ্চিন্তে থাকবেন তা নয়। ঘরের মধ্যে সারাদিনই মশা উড়তে দেখবেন। তাই চব্বিশ ঘণ্টার নিরাপত্তা থাকা জরুরি। সকাল থেকেই মশার আনাগোনা রোধের যাবতীয় ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখতে হবে।