রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জাতিগত নির্মূল অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ৪৩ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাবা-মা নিখোঁজ রয়েছেন। এ সংখ্যা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞ নিয়ে নতুন ধারণা দিয়েছে।
এর আগে মিয়ানমার সরকারের এক হিসাবে বলা হয়েছিল, রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানে নিহতের সংখ্যা চারশর বেশি হবে না।
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ওপর পরিচালিত জরিপের ভিত্তিতে এশিয়ান পার্লামেন্টারিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস (এপিএইচআর) জানিয়েছে, ২৮ হাজার ৩০০ রোহিঙ্গা শিশু তাদের বাবা কিংবা মাকে হারিয়েছে। আর সাত হাজার ৭০০ শিশু বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছেন।
এতে করে রোহিঙ্গা শিশুদের বাবা-মা নিখোঁজের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৩ হাজার ৭০০ জনে। তবে এটি পরিষ্কার না, এসব শিশুর কতটির আপন ভাইবোন রয়েছে বা তারা একই বাবা-মা হারিয়েছে।
এপিএইচআরের গবেষণা ও অ্যাডভোকেসিবিষয়ক পরিচালক ওরেন সামেট বলেন, যেসব শিশুর বাবা-মা তাদের সঙ্গে নেই, তাদের ওপর ভিত্তি করে এ সংখ্যা দাঁড় করানো হয়েছে। তারা হয়তো নিহত হয়েছেন। অথবা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়েছে। কিংবা তারা কোথায় আছেন, তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি।
জাতিসংঘ যখন এ হত্যাযজ্ঞকে জাতিগত নির্মূল অভিযান বলে আখ্যা দিচ্ছে, তখন সেখানে সেনাবাহিনীর অভিযানে কতজনকে হত্যা করা হয়েছে, তার কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, সহিংসতা শুরু হওয়ার মাসে অন্তত ছয় হাজার ৭০০ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন।
ফোর্টফাই রাইটসের ম্যাথু স্মিথ বলেন, শিশুদের বাবা-মা নিখোঁজের এ সংখ্যা বলে দিচ্ছে, সেখানে নৃশংসতার মাত্রা কতটা ব্যাপক ছিল।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর হাত থেকে বেঁচে আসা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে আমরা যে তথ্য পেয়েছি, তাতে ধরে নেয়া যায়- এ নিখোঁজ বাবা-মায়ের বড় অংশটি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
তারা ভাষায়, রাখাইন রাজ্যে নির্বিচার গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৬ সালেও যেটি ঘটেছিল।
এপিএইচআরের প্রধান বলেন, আমরা বহু শিশু দেখেছি, যাদের বাবা-মা নিহত হয়েছেন। তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। প্রতিবেশী ও পথচারীরা তাদের কক্সবাজারে নিয়ে এসেছে।