সাকিব আল হাসানের পর ইনজুরির তালিকায় যুক্ত হলেন ওপেনার তামিম ইকবাল ও সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। অনুশীলনের সময় হাতে ব্যাথা পেয়েছেন তামিম। একই অবস্থা মুশফিকের, কবজিতে ব্যাথা পেয়েছেন তিনি। ফলে প্রথম টি-২০ ম্যাচে তাদের খেলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই শঙ্কা থেকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-২০ স্কোয়াডে যুক্ত করা হয়েছে মোহাম্মদ মিঠুনকে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
পরশু দিন আঙুলে ব্যাথা পেয়েছিলেন তামিম। সেটি ততটা গুরুতর ছিল না। কিন্তু কাল ব্যাটিং অনুশীলনের সময় বাঁ হাতে ব্যাথা পেয়েছেন তিনি।
এছাড়া অনুশীলনের সময় কবজিতে চোট পেয়েছেন মুশফিক।
এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে ছাড়া শ্রীলঙ্কাকে মোকাবেলা করা বাংলাদেশের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।
ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ অবশ্য তাদের খেলার ব্যাপারে আশাবাদী। আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এখনো আমরা সেরা একাদশের জন্য অপেক্ষা করছি। তামিমের পাশাপাশি মুশফিকের ব্যাপারটাও আছে। আশা করছি তাদের দু’জনকেই আগামীকাল পাব। এটার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি।’
আগামীকাল প্রথম টি-২০ ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। বিকেল ৫টায় ম্যাচটি শুরু হবে।
সুজনের মিডিয়া বিরক্তি যে কারণে
খালেদ মাহমুদ সুজনের হঠাৎ মিডিয়ার ওপর রাগান্বিত হওয়ার কারণ নিয়ে ক্রিকেট পাড়ায় দিনভর চলেছে আলোচনা। কেন এমনটা করলেন সাবেক এ অধিনায়ক তার অনেক বিশ্লেষণ। বিসিবিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে রাখা এ সাবেকের ক্ষমতা ক্রমেই বাড়ছিল। বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের স্নেহভাজন বলে অনেকেই এ ব্যাপারে মুখও খুলতেন না। কিন্তু সাবেক তো আরো অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রয়েছেন। তাদেরও তো জাতীয় স্বার্থে কাজ করার অভিলাষ রয়েছে। কিন্তু অতগুলো দায়িত্ব (বিসিবির পরিচালক, গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির প্রধান, ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, প্রিমিয়ার ডিভিশনের ক্লাবের কোচ, অ্যাকাডেমির কোচ, জাতীয় দলের নির্বাচক কমিটির সদস্য, খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতি, জাতীয় দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর ও ম্যানেজার) পালন তো করছেন তিনি একাই। অন্যরা চান্স পাবেন কিভাবে?
সুজনের এত দায়িত্ব নিয়ে সাবেকদের মধ্যে সমালোচনা দীর্ঘদিন ধরে। ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং অনেকেই নতুনভাবেও যুক্ত হয়ে কাজও করতে আগ্রহী। কিন্তু এরা বিসিবির ধারেকাছে ভিড়তে পারছিলেন না। সুজন বলেছেন, নিঃস্বার্থভাবে তিনি নাকি কাজ করছেন। কিন্তু সেটা কিভাবে? এটা কী কোনো দিন সম্ভব? নিঃস্বার্থ কাজ করার লোক বিসিবিতেও আছে? তারা একটি পদে দায়িত্ব নিয়ে হয়তো রয়েছেন। না হয় বড়জোড় দু’টি। তাই বলে এত পদ?
এত কিছুর পরও জাতীয় দলের আপৎকালীন কোচের দায়িত্ব পেয়েও সেখানে চরমভাবে ব্যর্থ হওয়ার পর খোদ বিসিবির পরিচালনা পর্ষদেও কঠোর সমালোচনা হয়। সেখানে খালেদ মাহমুদকে জাতীয় দলের দায়িত্ব থেকেও সরিয়েও দেয়ার ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ হয় বলে জানা গেছে। সুজন যেহেতু বুঝতে পেরেছিলেন জাতীয় দলের সঙ্গে তিনি আর থাকতে পারছেন না। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
খালেদ মাহমুদ আজ যে অবস্থানে সেখানে মিডিয়ার ভূমিকাও অনেক। জাতীয় দলের অনেক ডাকসাইটে ক্রিকেটার, ভালো কোচ ও টেকনিক্যাল পার্সন হওয়া সত্ত্বেও তারা বিসিবিতে ঘেঁষতেও পারেন না। সুজনের এত কী অভিজ্ঞতা যে তিনি বিসিবির এতগুলো দায়িত্ব একা পালন করবেন? মিডিয়া প্রকাশ্যে কখনই তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কোনো রিপোর্ট করেনি। এমনিতেই তিনি অসুস্থ। কিছুদিন আগে অসুস্থতার জন্য তাকে বিসিবি দেশের বাইরে পাঠিয়ে চিকিৎসা করিয়েও এনেছে। এমন একজনের ওপর এত প্রেসার দেয়াও উচিত না। মিডিয়া বরাবরই ক্রিকেটের উন্নতিতেই কাজ করে আসছে। আজ খালেদ মাহমুদ যেখানে দাঁড়িয়ে তার আগেও ওই সমস্ত স্থানে অনেকেই দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠেনি। খালেদ মাহমুদের তো সমালোচনাই হয়নি। সামান্য সমালোচনা সহ্য করতে না পেরে এভাবে বক্তব্য দেবেন এটা কল্পনাতীত।
এটা সত্য দেশে ঢের অভিজ্ঞ ও যোগ্যতা সম্পন্ন ক্রিকেটার থাকা সত্ত্বেও পছন্দ-অপছন্দের কারণে তারা বিসিবির এ কমিটির ধারেকাছেও আসতে পারছেন না, নানা কৃত্রিম প্রতিকূলতার কারণে। সে চাপটা তো তিনি নিজেও অনুভব করতেন!
তার রাগান্বিত হওয়ার কারণ সোস্যাল মিডিয়াও। আগে মিডিয়ায় রিপোর্ট হলে ওই পর্যন্তই। মন্তব্য দেখা যেত না। এখন সামাজিক গণমাধ্যমের কারণে অনেক সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে সাধারণ জনগণ। অনেক ধরনের মন্তব্য হয় সেখানে। দেশে সামাজিক গণমাধ্যমের প্রভাব নিয়ে ইতোমধ্যে বিভিন্ন মহলও বেশ শঙ্কিত। খালেদ মাহমুদ নিজেও বলেছেন সে কথা। এ সব সমালোচনা সহ্য করতে না পেরে এবং বিসিবি তাকে কোচ হিসেবে আর কন্টিনিউ না করার সিদ্ধান্তে ঐকমত্য হওয়াটা তিনি অপমানজনক হিসেবে নিয়েছেন। এতেই প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে সব দোষ ও দায় মিডিয়ার ওপর চাপিয়ে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার আগে দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার উপলক্ষ সৃষ্টি করেছেন মাত্র। তবে এটাও ঠিক শুধু খালেদ মাহমুদই নন, মিডিয়া বিরক্তি বিসিবির অনেক পরিচালকেরই।