বিভিন্ন খাতে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের রফতানি আয় বেড়েছে তিন গুণ। ১৯৯১ সালে আমাদের দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল যেখানে ৫৬.৭ শতাংশ, তা এখন ২২ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। আজ বুধবার সকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম-বিডিএফের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) আয়োজনে এবং অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে এই উদ্বোধন অনুষ্ঠান হয়। এটি বিডিএফের তৃতীয়বারের মতো আয়োজন। এর আগে ২০০৯ সালে প্রথম ও ২০১৫ সালে দ্বিতীয়বার এ জাতীয় কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
গত এক দশকে জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ২৬ শতাংশ ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছর এই হার ৭ দশমিক ২৮ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে রপ্তানি ও বিদেশ থেকে আসা রেমিট্যান্স তিন গুণ বেড়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নয় গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। শেখ হাসিনা আরো বলেন, জিডিপির ভিত্তিতে বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের ৪৪তম অর্থনীতির দেশ আর ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান বর্তমানে ৩২তম।
আন্তর্জাতিক আর্থিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০৩০ ও ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ জিডিপি ও ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে বিশ্বের যথাক্রমে ২৮ ও ২৩তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে স্থান করে নিতে সক্ষম হবে। ফোরামে ২০৩০ সালের মধ্যে সফলভাবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের লক্ষ্যে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাংলাদেশের অতিরিক্ত ৯২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রাপ্তির বিষয়টিও আলোচিত হয়।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ আজ আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে। টেকসই অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সরকারের উন্নয়ন ভাবনা ও যথাযথ বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ আজকে সমগ্র বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। রূপকল্প অনুযায়ী, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ জন্য সবার পরামর্শ ও সহযোগিতা চান।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯১ সালে আমাদের দেশে যেখানে দারিদ্র্যের হার ছিল ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশ, আমরা সেই দারিদ্র্যের হার ২২ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। অতিদারিদ্র্যের হার ৭ দশমিক ৯ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দারিদ্র্যের হার ১৪ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।