৩২৪জন যাত্রী ও ১৪জন ক্রু নিয়ে উড়তে থাকা বিমানে দুই পাইলটের মারামারি ঘটনা ঘটেছে। বছরের শুরুর দিন এ ঘটনাটি ঘটেছে লন্ডন থেকে মুম্বাইগামী জেট এয়ারওয়েজের একটি বিমানের ককপিটে। এ ঘটনায় প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে দুই পাইলটকেই।
নতুন বছরের শুরুর দিনেই জেট এয়ারওয়েজের বিমানে বিতর্ক। লন্ডন-মুম্বই বিমানের দুই সিনিয়র পাইলট মাঝ আকাশে মারামারি করে কোপের মুখে পড়লেন। দুজনকেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ১ জানুয়ারি। ককপিটের মধ্যে মাঝ আকাশে দুজনে মারপিট করেন বলে অভিযোগ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ওয়ান ইন্ডিয়া জানিয়েছে, একজন নারী কমান্ডার বিমানটি চালাচ্ছিলেন। তার সহকারি পাইলট হিসেবে ছিলেন একজন পুরুষ। অভিযোগ, পুরুষ সহকর্মীই নারী পাইলটকে চড় মারলে তিনি কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে আসেন। বিমান তখন মাঝ আকাশে উড়ে চলেছে। বিমানের সমস্ত কেবিন ক্রু সদস্যরা পাইলটকে নিজের আসনে ফেরত যেতে অনুরোধ করেন। বিমানের চালকের সিটে বসে নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতে বলেন। বিমানে তখন প্রচুর যাত্রী ছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত বিমান সফলভাবে অবতরণ করে।
ভারতীয় ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশনে এই বিষয়টি উত্থাপিত হলে সাথে সাথে সহ পাইলট পুরুষকর্মীর লাইসেন্স সাসপেন্ড করা হয়। ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিমানটি ৯ ঘণ্টার ট্রিপে যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ভারতের মুম্বাই আসছিল। বিমান লন্ডনের আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে।
জেট এয়ারওয়েজে হেনস্থার শিকার বৃদ্ধা
ফের বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে যাত্রী হেনস্থার অভিযোগ তুলল এক যাত্রীর পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে সুপ্রিম কোর্টের এক প্রাক্তন আইনজীবীর মায়ের সঙ্গে। অভিযোগ জেট এয়ারওয়েজ কর্মকর্তারা তার মায়ের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছেন শুধু নয়, শারীরিক নিগ্রহও করেছেন। আইনজীবী কওয়লজিৎ সিং ভাটিয়া ফেসবুকে গোটা ঘটনা জানিয়ে পোস্ট করেছেন। ভাটিয়ার অভিযোগ, গত ৩ মে দিল্লি এয়ারপোর্টে তার মাকে মারধর করে জখম করা হয়েছে।
ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘সকাল ১০টায় আমায় মা ফোন করে বলেন, দেরি করে আসায় তাকে জেট এয়ারওয়েজের বিমানে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। তার গলা বসে গিয়েছিল। আমি মাকে বলি, বিমান কর্মকর্তাদের অনুরোধ করতে যাতে তাকে উঠতে দেওয়া হয়। যদি তা না সম্ভব হয় তাহলে পরের ফ্লাইটের বুকিং করতে বলি।’
ভাটিয়ার কথায়, ‘এরপর সকাল ১০টা ৩৫ মিনিট নাগাদ বিমানবন্দর থেকে আর একটা ফোন পাই। যা শুনি তাতে পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায় আমার। আমার মা অজ্ঞান হয়ে বিমানবন্দরের মেঝেয় পড়ে গিয়েছেন। এবং শরীর থেকে রক্তপাত হয়েছে। ’
ঘটনার পর বৃত্তান্ত জানিয়ে ভাটিয়া জেট এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষকে আইনি ভয় দেখালে তারা নাকি উল্টে হুমকি দেয়।
দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার জানায়, ‘আপনার যা ইচ্ছে তাই করুন। রোজ এখানে পুলিশ কেস ফাইল হয়। তবে কারও কিচ্ছুটি হয় না। সবকিছু ম্যানেজ করে নেওয়া হয়। ফলে এরপরও সময় নষ্ট করতে চাইলে যা খুশি করতে পারেন।’
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন আইনজীবী ভাটিয়া গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত। তিনি বলেছেন, গোটা ঘটনার পর দুঃস্বপ্নের মতো দিন কাটাচ্ছি।
অন্যদিকে জানা গেছে, জেট এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ গোটা ঘটনা জানতে পেরে বিষয়টি পর্যালোচনার পর অন্তর্বর্তী তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।