সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে জিঙ্কো বিলোবা উদ্ভিদের কথা৷ এর পাতায় আছে স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে সারিয়ে তোলার ক্ষমতা৷ গবেষণায় দাবি করা হচ্ছে জিঙ্কো বিলোবা নামে একটি গাছের ভেষজ নির্যাস স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীর মস্তিষ্ক আবার কার্যক্ষম করে তুলতে সাহায্য করতে পারে।
বিবিসির এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ব্রিটেনে কোন কোন দোকানে এই ভেষজ ওষুধ পাওয়া যায়। তবে চিনে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এবং অবসাদের চিকিৎসায় জিঙ্কো বিলোবা থেকে তৈরি ওষুধ ব্যবহার হয়।
গবেষকরা জানিয়েছেন, চিনে অন্তত ৩৩০ জন স্ট্রোক আক্রান্ত রোগীর ওপর ছয়মাস ধরে এক পরীক্ষামূলক চিকিৎসা চালানো হয়েছে৷ যাদের এই ওষুধ দেওয়া হয়েছে তাদের মস্তিষ্ক ভাল কাজ করতে পারছে। তবে কিছু বিশেষজ্ঞ বলছেন ওই রোগীদের মস্তিষ্কের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য জিঙ্কো বিলোবা একা কতটা সক্ষম তা এখনো বিচার্য বিষয়৷
স্ট্রোক অ্যান্ড ভাসকুল্যার নিউরোলজি পত্রিকায় বলা হয়েছে, জিঙ্কো বিলোবা নিয়ে আরও দীর্ঘ সময় নিয়ে পরীক্ষামূলক চিকিৎসা ও গবেষণা চালানো দরকার। স্ট্রোকের সময় মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোতে রক্তের সরবরাহ ঠিকমত হয়না, যার ফলে স্মৃতি নষ্ট হয় এবং স্ট্রোক থেকে সেরে ওঠা রোগীদের গুছিয়ে ভাবা বা সঠিকভাবে সব কাজ করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।
গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, স্ট্রোকে আক্রান্ত হবার এক সপ্তাহের মধ্যেই ওই ৩৩০জন রোগীকে জিঙ্কো বিলোবা থেকে তৈরি ওষুধ খাওয়ানো হয়। এদের মধ্যে অর্ধেক রোগীকে অ্যাসপিরিন ট্যাবলেটের পাশাপাশি প্রতিদিন জিঙ্কো বিলোবা দেয়া হয় আর বাকি অর্ধেককে শুধু অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়েছিল৷ তারা লক্ষ্য রেখেছিলেন, অ্যাসপিরিন ট্যাবলেটের সঙ্গে জিঙ্কো বিলোবা খাওয়ালে স্ট্রোকে আক্রান্ত মস্তিষ্কের ক্ষতি সামলে ওঠা সম্ভব হয় কীনা। গবেষণায় দেখা গেছে জিঙ্কো বিলোবা খাওয়ার পর রোগী কথা বলার জড়তা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে এবং পেশীর শক্তি অনেক দ্রুত ফিরে পেতে সক্ষম হয়েছে।
এর আগে প্রাণীদের ওপর পরীক্ষা চালায় গবেষকরা। সেখানে দেখা গেছে জিঙ্কো বিলোবা মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে স্নায়ু কোষের মৃত্যু ঠেকাতে পারে। যার কারণ সম্ভবত মস্তিষ্কের ধমনীগুলোতে রক্ত প্রবাহ জিঙ্কো বিলোবা বাড়াতে সাহায্য করে।
জিঙ্কো বিলোবা অন্যতম সবচেয়ে প্রাচীন এক প্রজাতির গাছ। গবেষকরা বলছেন যে নির্যাস তারা এই গবেষণায় ব্যবহার করেছেন তাতে ক্ষতিকর রাসায়নিকের মাত্রা ছিল আগে ব্যবহার করা নির্যাসের তুলনায় অনেক কম। পরীক্ষার সময় খুবই কম পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া তারা লক্ষ্য করেছেন। গবেষকরা বলেছেন তারা এই গবেষণায় যে ফল পেয়েছেন তাতে তারা আশাবাদী এবং এ নিয়ে তারা আরও গভীর গবেষণা করতে চান।