রাত-দিন ফেসবুকে পড়ে থাকা দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যে হুমকি। বিশ্বের সর্ববৃহৎ সোশাল মিডিয়া প্লাটফর্মের নেতিবাচক দিক নিয়ে বহু গবেষণা হয়েছে।
কিন্তু এবার দারুণ এক ইতিবাচক দিক বেরিয়ে এলো। একদল বিশেষজ্ঞের মতে, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং টেলিফোন রেকর্ডের ব্যবহারে রোগের প্রাদুর্ভাব মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া রোধ করা যায়। অ্যাকাউন্ট এবং টেলিফোন রেকর্ড ব্যবহার করে প্রত্যেককে বিশেষ রোগের ভ্যাক্সিন গ্রহণের বার্ত দেওয়া সম্ভব। এতে রোগটি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়বে না।
অনেক রোগই আছে হঠাৎ দেখা দেয় এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এ অবস্থায় বিশ্বজুড়ে দ্রুত সতর্কবার্তা এবং করণীয় জানাতে ফেসবুক অনন্য মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে। রোগ বিস্তারের পথ আটকে দেওয়া যায় ফেসবুকের সুবিধা নিয়ে। সেখানে আরো বলা যেতে পারে কোন ধরনের জীবাণু ছড়াচ্ছে বা একে রুখতে করণীয় কী হতে পারে। জার্নাল অব দ্য রয়ার সোসাইটি ইন্টারফেস-এ এসব কথাই তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা।
যারা এ কাজে এগিয়ে আসবেন তারাই ফেসবুকের কেন্দ্রিয় চরিত্রে পরিণত হতে পারেন। গবেষণায় বিশ্বের ৫ শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে পরীক্ষামূলকভাবে ডিজিটালি এবং সরাসরি যোগাযোগ করা হয়েছে। দেখা গেছে, যারা ফেসবুকের মতো সোশাল মিডিয়ায় অনেকের চোখে চোখে থাকেন, বাস্তব জীবনেও তারা অন্যদের আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত হন।
টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ডেনমার্কের বিশেষজ্ঞ এনিস মোনেস বলেন, যদি আপনি ফেসবুকার হিসেবে বন্ধুতালিকার মধ্যে সবার আগ্রহের কেন্দ্রে থাকেন, তবে আপনার কাছে অনেক বেশি মানুষের অ্যাকাউন্ট, ফোন নম্বর বা যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকবে। কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব এবং তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিলে আপনি অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করতে পারেন। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে আশঙ্কা ও করণীয় সংক্রান্ত তথ্য প্রচার করতে পারবেন।
ফেসবুকের যোগাযোগগুলো বিশ্লেষণ করে আমরা খুঁজে বের করতে পারি কোন কোন স্থানে কোন অ্যাকাউন্টগুলো অন্যদের মাঝে সহজে যোগাযোগ করতে সক্ষম। কম্পিউটার মডেলিং এবং গবেষণার মাধ্যমে এই মানুষগুলো বের করা সম্ভব। আর ভ্যাক্সিন গ্রহণ বা রোগ ছড়ানোর বিষয়ে যাবতীয় সতর্কবার্তা তাদের মাধ্যমেই সবার কাছে পৌঁছানো যায়।
রোগ প্রতিরোধে ভ্যাক্সিন গ্রহণের কর্মসূচিকে সফল করতে পারলেই মহামারী দেখা দেবে না। নিরপদ থাকবে মানবজাতি। আর এ সফলতার জন্যে ফেসবুক এক অনন্য মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে।