সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের তাঁত শ্রমিক শফিকুল ইসলাম ও সুতা কাটা দিনমজুর আঙ্গুরীর ঘর আলোকিত করতে আসা ফুটফুটে জমজ দুই ছেলে ও এক মেয়ে এখন বিষাদে পরিণত হয়েছে। গরিব অসহায় মা-বাবা সন্তানদের চিকিৎসা ও লালন পালনের চিন্তায় দিশেহারা। তীব্র শীতে ঝুপড়ি ঘরে এই তিন শিশু সন্তানসহ সাত সদস্যের অসহায় পরিবারটিকে মানবিক সহায়তার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, গত ১৭ নভেম্বর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আঙ্গুরীর কোলজুড়ে আসে দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান। একসঙ্গে তিন সন্তান পেয়ে আনন্দিতও হয়েছিলেন মা-বাবা। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। শফিকুলের অভাবের সংসার। তিনি পাশের গ্রামের একটি তাঁত কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। দিনে দুই-আড়াই শ’ টাকা রোজগার করেন। তা দিয়ে কোনো রকমে দুই সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে রকম সংসার চলছিলেন। এর মধ্যে অভাবের সংসারে আবার নতুন করে তিন যমজ সন্তান জন্ম নেয়ায় তাদের ওষুধপত্র ও লালপালন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিবারটিকে।
তিন সন্তানের ক্ষুধা শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধে নিবারণ হচ্ছে না। কিন্তু যার সংসার ঠিকমত চলে না, তিনি সন্তানদের দুধ কিনে খাওয়াবেন কিভাবে। প্রায়ই ক্ষুধায় কান্নাকাটি করে বাচ্চাগুলো অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অসহায় বাবা-মায়ের নীরবে চোখের পানি ফেলা ছাড়া কিছুই যেন করার নেই।
এবিষয়ে তাঁত শ্রমিক শফিকুল ইসলাম জানান, সন্তান গর্ভে আসার পর থেকেই ডাক্তারি চিকিৎসায় অনেক অর্থ ব্যয় হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে সিজার খরচ ও হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যয় হয়েছে ২০-২৫ হাজার টাকা। বর্তমানে আমার তেমন কোনো কাজ কর্ম নেই, তাই টাকার অভাবে এই মুহূর্তে শিশুদের উন্নত চিকিৎসাও করা সম্ভাব হচ্ছে না। এছাড়া স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সমাজপতিদের নিকট অসহায়ত্বে বিষয়ে বলা হলেও এখনো কোনো সহায়তা পায়নি বলে তিনি জানিয়েছেন। এদিকে অসহায় পরিবারটিকে মানবিক সহায়তার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গাজী আমজাদ হোসেন মাষ্টার।