রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের পথ বেয়ে দেশকে জ্ঞানভিত্তিক, প্রজ্ঞাময় সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করার আহবান জানিয়েছেন। ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ এক বাণীতে তিনি এ আহবান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৪ ডিসেম্বর, শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। এ দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি শহিদ বুদ্ধিজীবীদের, যাঁরা ১৯৭১ সালে বিজয়ের প্রাক্কালে হানাদারবাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শাহাদত বরণ করেন। আমি তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবগের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।
তিনি বলেন, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধাপে ধাপে বহু আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে মুক্তিসংগ্রামের জন্য প্রস্তুত করে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তাঁরই আহ্বানে বাঙালি জাতি মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
আবদুল হামিদ বলেন, দীর্ঘ ন’মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। হানাদারবাহিনী তাদের নিশ্চিত পরাজয় আঁচ করতে পেরে জাতিকে মেধাশূন্য করার হীন উদ্দেশ্যে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার আলবদর বাহিনীর সহযোগিতায় চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ বহু গুণীজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। জাতি হারায় তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বুদ্ধিজীবীরা দেশ ও জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির রূপকার।
তাঁদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা, সৃজনশীল কর্মকাণ্ড, উদার ও গণতান্ত্রিক চিন্তাচেতনা জাতীয় অগ্রগতির সহায়ক। জাতির বিবেক হিসেবে খ্যাত জাতির বুদ্ধিজীবীরা তাঁদের ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টি, যুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারকে পরামর্শ প্রদানসহ বুদ্ধিবৃত্তিক চেতনা দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিতে বিপুল অবদান রাখেন।
তিনি বলেন, কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্য, বিজয়ের প্রাক্কালে হানাদারবাহিনী পরিকল্পিতভাবে এ দেশের খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। জাতির জন্য এ এক অপূরণীয় ক্ষতি। শহিদ বুদ্ধিজীবীদের রেখে যাওয়া আদর্শ ও পথকে অনুসরণ করে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সমাজ গড়তে পারলেই তাঁদের আত্মত্যাগ স্বার্থক হবে।