বিপুল অংকের অলস টাকা নিয়ে বসে আছে দেশের ব্যাংক খাত। তার পরও দেদারছে মিলছে বিদেশি ঋণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণের পরিমাণ ছাড়িয়েছে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।টাকার অংকে যা প্রায় ৬৪ হাজার কোটি। সরকারের অনুমোদন আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকির অভাবে এ সুযোগটি নিচ্ছে গুটি কয়েক ব্যাংক আর উদ্যোক্তা।যাকে বিশ্লেষকরা দেখছেন নেতিবাচক হিসেবেই। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেখছে সুদ হার কমিয়ে আনার কৌশল হিসেবে। গত কয়েক বছর ধরেই দেশের ব্যাংকখাতের উচ্চ সুদ হার ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্যবসায়ীদের কাছে ঋণের সুদ হার হয়ে উঠেছিল আতংকজনক এক বিষয়।তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর চাপ বাড়ছিল সুদ হার কমিয়ে আনার জন্য। বাধ্য হয়েই কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেছে নেয় বিদেশি ঋণ উদারীকারণের উপায়। গভর্নরের নেতৃত্বাধীন বিনিয়োগ বোর্ডের কমিটি গত এক বছরে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি ঋণ অনুমোদন করে। ফলে দেশের ব্যাংকগুলো ঋণের সুযোগ হারায় ৩২ হাজার কোটি টাকা।কিন্তু আমদানিকারকদের ঋণের জন্য উন্মুক্ত ছিল ব্যাংকগুলোর অফশোর ইউনিট-ওবিইউ। যেখান থেকে আমদানিকারকরা মাত্র সাড়ে ৬ শতাংশ সুদে ঋণ পান। বিস্ময়কর হলো-মার্চের আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অফশোর ইউনিটের ঋণের পরিমাণের ওপর কোন নজরই ছিল না।এরপর তথ্য নিয়ে জানা যায়, ওবিইউ এর মাধ্যমে ঋণের পরিমাণ ৩১ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এরমধ্যে শুধু এইচএসবিসি ব্যাংকের ৯ হাজার ৫০০ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। বিদেশি ব্যাংকগুলো তাদের প্রধান কার্যালয় থেকে ওবিইউ ইউনিটে বৈদেশিক মুদ্রায় তহবিল আনতে পারে। আর দেশীয় ব্যাংকগুলোর সেই সুযোগ নেই।তাই দেশীয় ব্যাংকগুলোকে ওবিইউ তহবিল বাড়াতে হলে বিদেশি ব্যাংক বা দাতা প্রতিষ্ঠান থেকে ধার করতে হয়। যেখানে রয়েছে নানান জটিলতা। তাই বলা চলে ওবিইউ ঋণে একচ্ছত্র আধিপত্য বিদেশি ব্যাংকগুলোর। তাই এ খাতের মুনাফার সিংহভাগই যাচ্ছে তাদের পকেটে। ধুকছে দেশীয় ব্যাংকগুলো।
দেশীয় ব্যাংকে অলস টাকা, তবুও বিদেশি ঋণ
Share!