রাজধানীতে থানা ভিত্তিক সন্ত্রাসী তালিকা আছে কি না তা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। এ বিষয়ে থানা পুলিশ ও ডিএমপির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরস্পরবিরোধী মতামত দিয়েছেন। তবে কেউই এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। অন্যদিকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার বলছে, শুধু রাজধানী নয় সারা দেশেই থানায় যত মামলা হয়েছে বা হচ্ছে তার উপর ভিত্তি করে ছিচকে চোর থেকে শুরু করে শীর্ষ সন্ত্রাসী সবাই আছে পুলিশের জালে।
রাজধানীর তেজগাঁও থানার ক্রাইম বোর্ড। ধুলো জমা এই বোর্ড যে বহুদিন খোলাই হয়নি তা মাকড়শার জালগুলোই সাক্ষ্য দিচ্ছে। প্রায় একই দশা শাহআলী ও আদাবর থানায়। তবে অন্যধরণের চিত্রও আছে। যেমন রমনা থানার সুন্দর ঝকঝকে বোর্ডে মাত্র ৯ জন অপরাধীর ছবি। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, তাহলে এই ৪ থানায় কি অপরাধ ও অপরাধী কম?
আবার শের-ই-বাংলা ও শাহবাগ থানায় কোনো বোর্ডই নেই। অবশ্য যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ম্যানুয়াল পদ্ধতির পরিবর্তে ভিন্ন উপায়ে তালিকা তৈরীর সুযোগ আছে; তবে অভিযোগ আছে রাজধানীর ৪৯টি থানায় অপরাধী তালিকা হালনাগাদ হয় না দীর্ঘ দিন। যদিও থানা পুলিশের দাবি প্রতিনিয়তই তালিকা আপডেট করা হচ্ছে।
অবশ্য অপরাধীর সংখ্যাটি কত তা বলতে চাননি কোনো থানার কর্মর্কতারা। যুক্তি হিসেবে তারা দাঁড় করিয়েছেন- নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার প্রসঙ্গ যদিও পুলিশ সদর দফতরের একটি সূত্র জানিয়েছে, অপরাধী তালিকা বলতে যা বোঝায় সে ধরণের কোনো তালিকা নেই পুলিশের কাছে।
তবে সারা দেশে থানায় দায়ের হওয়া লাখ লাখ মামলার ভিত্তিতে এখন পর্যন্ত ৭৩ লাখ মানুষের পূর্ণাঙ্গ নথি লিপিবদ্ধ আছে সদর দফতরের কাছে। সে হিসেবে ছিচকে চোর থেকে শুরু করে শীর্ষ সন্ত্রাসী সবাই আছে পুলিশের জালে। শুধু রাজধানীতেই এ সংখ্যা সোয়া ১ লাখের কিছু বেশি। মূলত দুটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে এসব তথ্য রাখা হচ্ছে। সদর দফতরের সফটওয়্যার ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা সংক্ষেপে সিডিএমএস আর ডিএমপির সফটওয়্যারটির নাম হলো এসআইভিএস বা সাসপেক্ট আইডেন্টিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম।
নগরে অপরাধ কমাতে থানা ভিত্তিক অপরাধী তালিকা থাকা উচিত বলে মনে করেন সাবেক আইজিপিরা। থানা ভিত্তিক তালিকাগুলো প্রতিনিয়ত হালনাগাদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয়ভাবে এসব মনিটরিংও করা উচিত বলেও মত দিয়েছেন তারা।