এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও করার অভিযোগ নথিভুক্ত করতে পাঁচ দিন ঘোরানো এবং টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে গাজীপুরের শ্রীপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
সোমবার ওই কিশোরীর (১৬) দায়ের করা মামলা নথিভুক্ত করার পর পুলিশ বলেছে, মেয়েটিকে ‘বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা’ করা হয়েছিল। সে জন্যই তাদের দেরি হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ওই কিশোরী শ্রীপুরের টেপিরবাড়ী এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে একটি সিরামিক কারখানায় কাজ করেন।
তার অভিযোগ, টেপিরবাড়ী গ্রামের রুবেল (২২) তাকে কারখানায় যাওয়া-আসার পথে বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করতেন।
“পরে প্রেমের কথা বলে গত ৮ সেপ্টেম্বর বেলা সোয়া ১১টার দিকে একটি ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে রুবেল জানায়, ওই ঘটনার ভিডিও করা হয়েছে। এটা প্রকাশের ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে।”
গত ২৪ অক্টোবর রাতে রুবেল তাকে আবার ধর্ষণ করে জানিয়ে ওই কিশোরী বলেন, “রুবেল বলেছিল তার সঙ্গে দেখা করলে সে ওই ভিডিওটা মুছে ফেলবে। কিন্তু দেখা করতে গেলে সে আবার ধর্ষণ করে।
“এ সময় তার সঙ্গে তার বন্ধু রায়হানও (২১) ছিল। রায়হান মুখ চেপে ধরে। পরে রায়হানও ধর্ষণের চেষ্টা করলে ধস্তাধস্তি করে পালিয়ে আসতে সক্ষম হই।”
ঘটনার পরদিনই থানায় গেলেও পুলিশ সেদিন মামলা নেয়নি বলে কিশোরীর অভিযোগ।
তিনি বলেন, “তারপর আরও তিন দিন থানায় যেতে হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে থানায় নিয়ে বসিয়ে রাখে।
“তখন আমাকে বলা হয়, রাতেও আমাকে থানায় থাকতে হবে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও আসামি আটকের পর অভিযোগ মামলা হিসেবে এন্ট্রি করা হবে।”
শ্রীপুর থানার এসআই মো. জাকির হোসেন সোমবার রাতে জানিয়েছিলেন, তখনও তারা মামলা নেননি।
মঙ্গলবার সকালে তিনি বলেন, “সোমবার রাতেই মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। রুবেল (২২), রায়হান ওরফে রাশেদ (২১) ও রুবেলের বাবা শাহজাহানকে (৪৫) আসামি করা হয়েছে। শাহজাহান কিশোরীকে হুমকি দেওয়ায় তাকে আসামি করা হয়েছে।”
ধর্ষণের আলামত নষ্ট করার জন্য পুলিশ এই বিলম্ব করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
ওই কিশোরী বলেছেন, এসআই জাকির তার কাছে তিন হাজার টাকা চেয়েছিলেন।
“আমি দেড় হাজার টাকা দিতে রাজি হলে মঙ্গলবার পুলিশ আমাকে মেডিকেল টেস্টের জন্য পাঠাতে রাজি হয়। প্রায় এক সপ্তাহ সময় নষ্ট করেছে। আলামত নষ্ট করার জন্য পুলিশ এটা করতে পারে।”
এসআই জাকির টাকা চাওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, মঙ্গলবার মেয়েটিকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
মামলা নিতে বিলম্ব ও কিশোরীকে রাতে থানায় থাকতে বলার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “রুবেলের সঙ্গে তাকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।