চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নবজাতক রেখে আড়াই মাস ধরে উধাও হয়ে গেছে মা-বাবা দুজনই। হাসপাতালে শিশুটি জন্মের পর বিলের টাকা আনতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি তারা। শিশুটিকে সেবা-যত্ন দিয়ে আগলে রেখেছেন নার্স আর চিকিৎসকরা। সমাজ বিজ্ঞানীরা বলছেন, সামাজিক সংহতি বিনষ্ট ও হতাশা থেকেই বাড়ছে এমন ঘটনা।
নাম ঠিকানাহীন ফুটফুটে ছোট শিশুটি জন্মের পর বন্দর নগরীর ন্যাশনাল হাসপাতালের বিছানায় গত আড়াইমাস ধরে বেড়ে উঠছে। পৃথিবীতে যে শিশুর আসল ঠিকানা মা-বাবা, বুকে আগলে রাখার কথা যাদের, তারাই তাকে রেখে পালিয়ে গেছেন। অনিশ্চিত ভবিষৎ নিয়ে বেঁচে থাকা কন্যা শিশুটিকে মায়ের আদর দিয়ে লালন পালন করছেন নার্স আর চিকিৎসকরা।
নার্সরা বলেন, ‘আমরা যেই যে শিফটে থাকি না কেনো ওকে সবাই আমরা বেশি আদর করি। যতদিন যাচ্ছে বাচ্চাটির প্রতি ভালোলাগা বাড়ছে। চলে গেলে আর ভালো লাগবে না।’
গত ১০ই আগস্ট হাসপাতালে ভর্তির তিনদিনপর জন্ম নেয় কন্যা শিশুটি। পরে ১৩ই আগস্ট মা-বাবা ব্যাংক থেকে বিলের টাকা আনতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। এই অবস্থায় আইনী প্রক্রিয়ায় শিশুটিকে হস্তান্তর করতে চায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন সামাজিক বন্ধন ভেঙ্গে যাওয়া ও মূল্যেবোধের অবক্ষয়ের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে এমন ঘটনা।
সমাজ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেন, ‘যখন সমাজের বন্ধনটা আলগা হয়ে যায়, তখন নৈতিকতার বন্ধনটাও আলগা হয়ে যায়। তখন মানুষ নিজেকে নিয়ে থাকতে চায়।’
শিশুটির মা-বাবার দেয়া ঠিকানা হাটহাজার উপজেলায় খোঁজ না পেয়ে নগরীর চকবাজার থানায় একটা সাধারণ ডায়েরি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এর আগে নগরীর আকবর শাহ, প্রবর্তক মোড়. পতেঙ্গার ড্রেন থেকে কুড়িয়ে পাওয়া তিন নবজাতককে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ ও এলাকাবাসী।