বাংলাদেশে জনসংখ্যার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অপুষ্টিতে ভুগছে। ক্ষুধা মোকাবেলায় বাংলাদেশে অগ্রগতি হলেও এখানে এখনো মাঝারি মাত্রার ক্ষুধা বিরাজ করছে। বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক ২০২৪ অনুযায়ী দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের স্কোর ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের তুলনায় ভালো অবস্থানে থাকলেও বাংলাদেশ নেপাল ও শ্রীলংকার চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত বিশ্ব ক্ষুধা সূচক ২০২৪-এর রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯.৪ স্কোর পেয়ে বাংলাদেশ ১২৭টি দেশের মধ্যে ৮৪তম অবস্থানে রয়েছে। রিপোর্টের বিশ্লেষণ অনুযায়ী বাংলাদেশে মাঝারি মাত্রার ক্ষুধা বিরাজ করছে।
মূলত চারটি সূচকের ওপর ভিত্তি করে ক্ষুধা সূচকের স্কোর নির্ধারিত হয়েছে: এর মধ্যে অপুষ্টির মাত্রা, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের উচ্চতা অনুযায়ী কম ওজন, বয়স অনুযায়ী কম উচ্চতা এবং শিশুমৃত্যুর হার। বাংলাদেশে জনসংখ্যার ১১.৯ শতাংশ অপুষ্টিতে ভুগছে।
পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের ২৩.৬ শতাংশ খর্বকায়। পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের ১১.০ শতাংশ শারীরিকভাবে দুর্বল। পাঁচ বছর বয়সের আগে ২.৯ শতাংশ শিশু মারা যায়।রিপোর্ট প্রকাশ উপলক্ষে ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে বাংলাদেশ এবং কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের যৌথ আয়োজনে ‘ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশের পথে: বাধা এবং উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন ড. মিশেল ক্রেজা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাসুদুল হাসান, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ হাসান এবং বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদের মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, অনিরাপদ কৃষি চর্চার ফলে আমরা নিরাপদ খাদ্যের যোগান নিশ্চিত করতে পারছি না। এতে পুষ্টি নিরাপত্তাও নিশ্চিত হচ্ছে না। মাছসহ বাংলাদেশে যেরকম প্রাকৃতিক খাদ্য বৈচিত্র্য আছে তা রক্ষার ওপর জোর দেন তিনি।
এ ছাড়া খাদ্য নিরাপত্তায় নারীর লোকজ জ্ঞানকেও গুরুত্ব দেওয়ার ওপর জোর দেন তিনি। অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও খাদ্যব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বলে উল্লেখ করেন তিনি।ড. মিশেল ক্রেজা বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বহুখাতভিত্তিক উন্নয়নে কার্যক্রমে বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে আসছে। দরিদ্র মানুষেরা অনেক সময় পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার কিনতে পারে না। তাই সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে দরিদ্রসহ অন্যান্য বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীকে আরো অগ্রাধিকার দিয়ে সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তার ব্যবস্থাকে জোরদার করতে হবে।