শুধু অপারেশন ডাল-ভাত কিংবা রেশন বৃদ্ধির জন্য পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি। এই ঘটনা দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা হিসেবে ঘটানো হয়েছে। বাংলাদেশকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানানোর উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মতিন।এ সময় তিনি বলেন, ‘বিডিয়ার হত্যাকাণ্ডের পরপরই সেনা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সেনা সদস্যদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আমি সেই তদন্ত কমিটির একজন সদস্য ছিলাম। এই হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন শেখ হাসিনা।
এ ছাড়া এ ঘটনার সঙ্গে শেখ হাসিনার নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা জড়িত ছিলেন।’
সে সময় তদন্তের কিছু তথ্য তুলে ধরে মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল মতিন বলেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ডের আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টায় রাজধানীর বনানীতে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের বাসায় বিডিআরের ডিএডি হাবিব, ডিএডি জলিল, ল্যান্সনায়েক রেজাউল, হাবিলদার মনির, সিপাহি সেলিম, কাজল, শাহাবউদ্দিন, একরাম, আইয়ুব, মঈন, রুবেল, মাসুদ, শাহাদত ও জাকির (বেসামরিক) বৈঠক করেন। এ ছাড়া ২০০৮ সালের ১৭-১৮ ডিসেম্বর ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের বাসাতেও হাবিলদার মনির, সিপাহি শাহাব, সিপাহি মনির বৈঠক করেন। নির্বাচনের আগের দিন সন্ধ্যায় বিডিআর দরবারসংলগ্ন মাঠে সিপাহি কাজল, সেলিম, মঈন, রেজা এবং বেসামরিক ব্যক্তি জাকিরসহ কয়েকজন বৈঠক করেছেন।
’তিনি আরো বলেন, ‘সেনা কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গঠিত তদন্ত আদালতে কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হতে হয়। তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে অনেক অসামরিক ব্যক্তির বক্তব্য নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তাদের সহযোগিতা না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য না নিয়েই প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়েছে। ফলে এই তদন্ত প্রতিবেদন সম্পূর্ণ হয়নি। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এই হত্যাযজ্ঞের বিচার না করা হলে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় না আনা হলে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে পাওয়া নতুন স্বাধীনতা মুখ থুবড়ে পড়বে।
’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোরশেদুল হক, কর্নেল (অব.) আবদুল হক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আমিনুল ইসলাম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সৈয়দ কামরুজ্জামান প্রমুখ।