অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাষ্ট্র মেরামতের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধনের জন্য জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শীর্ষস্থানীয় ২০ পত্রিকার সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময়সভায় প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৈঠকের বিষয়ে ব্রিফিং করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম এসব তথ্য জানান।
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে শফিকুল আলম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান রাষ্ট্র মেরামত করা জন্য মস্তবড় সুযোগ এনে দিয়েছে।
বাংলাদেশকে নতুন শেখরে নেওয়ার জন্য এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। তবে এর জন্য জাতীয় ঐক্যের খুব প্রয়োজন।’প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধান উপদেষ্টাকে তারা বলেছিলেন অন্তর্বর্তী সরকার যেন যৌক্তিক সময় পর্যন্ত থাকেন। এই যৌক্তিক সময় আসলে কতটা সময়, সে বিষয়ে ড. ইউনূস সম্পাদকদের কাছে জানতে চান।
এই সময়টাতে কী কী মৌলিক কাজ সরকারের করা উচিত- এ বিষয়েও পরামর্শ চান তিনি।সম্পাদকদের দেওয়া প্রস্তাবগুলো তুলে ধরে শফিকুল আলম বলেন, ‘বিভিন্ন রকম কথা এসেছে যেমন- অন্তত ২ বছর মেয়াদ দেওয়া যেতে পারে। অনেকে আবার দুই থেকে তিন বছরের কথা বলেছেন। আবার কেউ কেউ প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করতে যতটা সময় লাগে তা দেওয়ার পক্ষে প্রস্তাব দেন।
’শফিকুল আলম বলেন, তবে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে বেশির ভাগই বলেছেন, যেসব সংস্কারকাজ বা যে কর্মপরিকল্পনা অন্তর্বর্তী সরকারের রয়েছে, সেটিই আসলে নির্ধারণ করবে এই সরকারের মেয়াদ কত দিন হবে।
বৈঠকে সম্পাদকদের পক্ষ থেকে আসা পরামর্শ তুলে ধরে প্রেসসচিব আরো বলেন, ‘সংবিধান সংশোধন, সংবিধান পুনর্লিখন, আইন কমিশন, সংবিধান কমিশন, মিডিয়া কমিশন ও পুলিশ কমিশন গঠনের কথা এসেছে। পুলিশকে কিভাবে আরো কার্যকরভাবে কাজে লাগানো যায় এবং নির্বাচন কমিশন সংস্কারের কথা এসেছে।’
এ ছাড়া সম্পাদকরা নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের ভুলত্রুটি নিয়ে লেখার অনুরোধ জানিয়ে ড. ইউনূস সম্পাদকদের বলেন, ‘আপনারা লেখেন।
আমাদের দোষ-ত্রুটি হলে তা নিয়ে লেখেন। আমরা আপনাদের কথা শুনতে চাই। মতামত জানতে চাই।’প্রেসসচিব সচিব বলেন, ড. ইউনূস বারবার বলেছেন, তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন এবং মুক্ত, প্রাণবন্ত ও গতিশীল গণমাধ্যম দেখতে চান।
এ বৈঠকে কালের কণ্ঠ’র সম্পাদক হাসান হাফিজ, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবিরসহ ২০টি পত্রিকার সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।