দেশে বর্তমানে খাদ্যের কোনো সংকট নেই বলে জানিয়ে খাদ্যসচিব ইসমাইল হোসেন বলেছেন, এই মুহূর্তে সরবরাহ পরিস্থিতি ভালো আছে। যে কারণে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে খাদ্য সংগ্রহ, মজুত ও বন্যা দুর্গত জেলাগুলোতে কার্যক্রম নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় এ তথ্য জানান তিনি।
খাদ্য সচিব বলেন, এখন খাদ্যের (চাল ও গম) সরকারি মজুত ১৯ লাখ, এটা নিরাপদ পর্যায়ে আছে। আমরা আপদকালীন মজুত ধরেছি ১৩ লাখ টন, এ সংগ্রহ মৌসুমে এখন পর্যন্ত আরও দুই লাখ টন হওয়ার কথা। সেখানে আমাদের মজুত অনেক বেশি আছে।
তিনি বলেন, শুধু সরকারি মজুত নয়, বেসরকারি ১৫০০ মিলে মজুত সন্তোষজনক বলে আমরা জেনেছি। কারণ গত বোরো মৌসুমে উৎপাদন ভালো হয়েছে। এছাড়া, সরবরাহ মধ্যবর্তী সময়ে কিছুটা বিঘ্ন ছিল। কিন্তু এখন কোনো সমস্যা নেই।
বিদেশ থেকে খাদ্য কেনা বা আমদানি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন সরকারি কোনো ক্রয় প্রস্তাব নেই। নতুন সরকার সম্মতি দিলে কিনব। তবে, গত বছরের কেনা ৫০ হাজার টন গমের একটি জাহাজ বন্দরে খালাসের জন্য আছে।
চালের দাম প্রসঙ্গে ইসমাইল হোসেন বলেন, আগস্টের ৫ তারিখের আগে পর্যন্ত চালের দাম ২-৫ টাকা বেড়েছিল। এখন কমেছে। বাজারে ৪৯-৫১ টাকা সাধারণ মানের চাল পাওয়া যাচ্ছে। এটা স্বস্তিদায়ক।
গতকাল ৩১ আগস্ট বোরো মৌসুমের সংগ্রহ কার্যক্রম শেষ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের এ মৌসুমে ১১ লাখ টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল, হয়েছে ১১ লাখ ২৫ হাজার টন। আতপ চালও এক লাখ টনের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৪ হাজার টন বেশি হয়েছে। তবে, ধানের সংগ্রহ কম হয়েছে। এটা বরারবই কম হয়, গত বছর ৪০ শতাংশ হয়েছিল, সে তুলনায় ভালো হয়েছে। পাঁচ লাখ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীত হয়েছে দুই লাখ ৯৬ হাজার টন।
বন্যাদুর্গত ১৪টি জেলায় ৩ মাস বিশেষ ওএমএস কার্যক্রমের মাধ্যমে চাল ৩০ টাকা ও খোলা আটা ২৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে বলে জানান খাদ্যসচিব।
সচিব বলেন, এ স্পেশাল ওএমএস ওই এলাকাগুলোর ২৩০টি কেন্দ্রে দেওয়া হবে। প্রতি কেন্দ্রে ১ টন চাল ও আটা হিসেবে প্রতিদিন ২৩০ টন চাল ও ২৩০ টন আটা বিক্রয় করা হবে। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে এ কার্যক্রমে সর্বমোট ১৪ হাজার ৪৯০ টন চাল ও ১৪ হাজার ৪৯০ টন আটা বিক্রয় করা হবে।
এই ৩ মাসে চাল বাবদ ৪১ কোটি ১২ লাখ টাকা ও আটা বাবদ ৪৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা মোট ৯০ কোটি ৬৮ লাখ ১৮৬৮২ (নব্বই কোটি আটষট্টি লক্ষ আঠারো হাজার ছয়শত বিরাশি) টাকা খাদ্য ভর্তুকি খাদ্য মন্ত্রণালয় হতে দেয়া হবে।
সারা দেশে ওএমএস কার্যক্রমের তথ্য দিয়ে সচিব জানান, বর্তমানে সারা দেশের সকল সিটি কর্পোরেশন, শ্রমঘন ৪টি জেলা (ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদী), সারা দেশের সকল জেলা সদর পৌরসভায় ওএমএস খাতে চাল ও আটা বিক্রি করা হচ্ছে।