খুব দ্রুত অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু এই নির্বাচন তখনই হবে-যখন পাঁচটি ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কার সম্পূর্ণ হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রবিবার (১৮ আগস্ট) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে তিনি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফ করেন। এর আগে গত সোমবার (১২ আগস্ট) পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন কূটনীতিকদের ব্রিফ করেছিলেন। ড. ইউনূস কূটনীতিকদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, বিচার বিভাগ, নিরাপত্তা বাহিনী ও মিডিয়াতে সংস্কার করার পরে আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করবো।’
তিনি বলেন, ‘এখনকার অগ্রাধিকার হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা। দ্রুত এটি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতিও সরকারের গুরুত্ব থাকবে। একইসঙ্গে তৈরি পোশাক শিল্পে কোনও অস্থিরতা সহ্য করা হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেছি, তখন দেশের অবস্থা অত্যন্ত করুণ। ক্ষমতায় থাকার জন্য স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। বিচার বিভাগের ভঙ্গুর অবস্থা। গণতান্ত্রিক অধিকারকে ১৫ বছর ধরে দমনের মাধ্যমে খর্ব করা হয়েছে। নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। নতুন প্রজন্ম ভোট ছাড়াই বেড়ে উঠছিল। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাংক লুট করা হয়েছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশের কোষাগার শেষ করা হয়েছে।’
ছাত্র আন্দোলনকে ‘দ্বিতীয় বিপ্লব’ হিসেবে অভিহিত করেছেন মুহাম্মদ ইউনূস। এখন নতুনভাবে শুরু করতে হবে তিনি জানান। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘লাখো জনতার অভ্যুত্থানে চরম স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। কিন্তু যাওয়ার আগে নিরাপত্তা বাহিনী এবং শেখ হাসিনার ছাত্র সংগঠন স্বাধীনতা যুদ্ধের পর দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে জঘন্য বেসামরিক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।’
ছাত্র আন্দোলনের সময়ে যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেটির পূর্ণ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করার জন্য জাতিসংঘের নেতৃত্বকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘কিছু দিন আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টুর্কের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত চাই আমরা। এর জন্য জাতিসংঘের তদন্তকারী দলকে আমরা সব ধরনের সহায়তা দেবো।’