দখল ও চাঁদাবাজদের কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, আমি কোনো রাজনীতিবিদ না। একজন ফৌজ, যা বলি তাই করার চেষ্টা করি। আপনারা কেউ চাঁদাবাজি করবেন না। দখলবাজি করবেন না। যদি চাঁদাবাজি করেন তাহলে পা ভেঙে দেয়া হবে।
রোববার (১১ আগস্ট) প্রথম দিনের মতো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজের কার্যালয়ে প্রবেশের আগে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমি সেনাপ্রধানকে বলেছি এরকম কর্মকাণ্ড যারা করবে তাদের পা ভেঙে দিতে। আমার কানে এসব আসলে ভালো হবে না।
তিনি বলেন, আমি কোনো রাজনীতিবিদ না যে সকালে এক কথা বলব আর বিকেলে আরেক কথা বলব। আমি এখনো মন্ত্রণালয়ে ঢুকিনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনেক বড়। এটা সম্পূর্ণ আমার ঘাড়ে। আমি একটু যাই, বসি এবং সবার সঙ্গে পরিচিত হই, সমস্যাগুলো শুনি। আমাদের দেশের অনেক সমস্যা আছে।
এ উপদেষ্টা বলেন, আমি দুটি-চারটি কথা বলে যাই, এ দেশে রাজনীতি করতে হলে পলিটিকাল অ্যাক্ট অনুযায়ী করতে হবে। আমি যতদিন পর্যন্ত আছি এটা করে ছাড়ব। এটা আপনাদের পছন্দ হলেও ভালো না হলেও ভালো।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন আমি ইলেকশন কমিশনে ছিলাম, সেখানে অনেক কিছু করে ছেড়েছি। আপনারা যদি পলিটিকাল অ্যাক্টের মধ্যে থাকেন তাহলে কার্যক্রম চালাতে পারবেন। আর না থাকলে পারবেন না। আপনারা ডিক্টেটরিয়াল জায়গায় চলে যাবেন সেটা হবে না৷
পুলিশ সদস্যদের কাজে যোগ দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আগামী বৃহস্পতিবারের (১৫ আগস্ট) মধ্যে যারা কাজে যোগ দেবেন না, আমরা ধরে নেবো তারা চাকরি করবেন না। বৃহস্পতিবারের মধ্যে আপনারা কাজে যোগদান করুন। এই সময়ের মধ্যে যারা যোগদান করবেন না, তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে।
তিনি বলেন, যা কিছু ঘটেছে, তার বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে। তদন্ত অনুযায়ী বিচারবিভাগ বিচার করবে। এতে কারোর ভয় পাওয়ার কিছু নাই। নির্দোষ কেউ কোথাও কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না বলেও জানান তিনি।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পুলিশের গায়ে কেউ হাত দেবেন না। পুলিশের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন নিশ্চয়। ডাকাতি হচ্ছে বা ডাকাতির ভয় পাচ্ছেন। বোঝার চেষ্টা করুন, পুলিশের প্রয়োজন রয়েছে।
তিনি বলেন, একটা বিশেষ পরিস্থিতি দেশে তৈরি হয়েছে। তার সুযোগ আপনারা নিচ্ছেন, এটা বন্ধ করেন। আমার কাছে খবর আসছে, কাওরান বাজারে চাঁদাবাজি, একটি ব্যাংকে ঢুকে গোলাগুলি করে দখলের চেষ্টা হচ্ছে। এভাবে চলবে না।
তিনি আরও বলেন, আমি সব রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে বলতে চাই, একটা পলিটিকাল পার্টির অবস্থা আজকে দেখুন। এত বড় একটি ঐতিহ্যবাহী দল ; যার নামের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতা জড়িত; আজকে তাদের সদস্যদের পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। তাদের জায়গায় যদি আপনি মনে করেন বাজার দখল করবেন, এটা দখল করব, ওটা দখল করব, চাঁদাবাজি করব; তাহলে কিছুদিন করেন। তিনি বলেন, আমি পাবলিকও না, রাজনীতিবিদও না৷ আমার ব্র্যাকগ্রাউন্ড হচ্ছে ফৌজি মানুষ। যা বলব তাই করব৷
জনগণের উদ্দেশে তিনি বলেন, চাঁদাবাজদের ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করুন। নিজেরা আইন হাতে তুলে নেবেন না।