ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর দুইটার পর থেকে দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানে ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মানবকণ্ঠের প্রতিবেদক নয়ন কুমার বর্মন জানান, সোমবার টিএসসিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীরা সমাবেশ চলার মধ্যেই বিকেল ৩টার দিকে বিজয় একাত্তর হলের সামনে সংঘর্ষের সূচনা হয়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি দল বিজয় একাত্তর হলে প্রবেশ করতে গেলে তাঁদেরকে বাধা দেওয়া হয়। এ নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ শুরু হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা দুই পাশে অবস্থান নিয়ে কিছুক্ষণ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ চালিয়ে যান। এর মধ্যে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সহায়তা চাইলে টিএসসি থেকে একটি দল সেদিকে যাত্রা করেন। মল চত্বরে তাদের বাধা দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এ জায়গায়ও দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া ও ইট–পাটকেল নিক্ষেপের এক পর্যায়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনের জায়গা থেকে পিছু হটেন। তাদের একদল ফুলার রোড হয়ে এবং আরেক দল স্যার এ এফ রহমান হলের সামনের রাস্তা দিয়ে নীলক্ষেতের দিকে সরে যান। অপর দিকে বিজয় একাত্তর হলের সামনে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ চালিয়ে আসা শিক্ষার্থীরাও বিকেল ৪টার দিকে পিছু হটেন।
বিজয় একাত্তর হলে আন্দোলনকারীরা আহত হওয়ার খবর পেয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হওয়া আন্দোলনকারীরা বিজয় একাত্তর হলের দিকে আসতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা বিজয় একাত্তর হলের সামনে অবস্থান নেওয়া শুরু করেন। সংঘর্ষ চলাকালে হলের সামনে পার্কিং করে রাখা চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। হামলায় বেশ উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন গণমাধ্যমকর্মী রয়েছেন। সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৯ জন আহত হওয়ার খবর জানা গেছে। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাউকে দেখা যায়নি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, এখানে আসিফ নজরুল ও ফরহাদ মজহারের মতো লোকেরা উসকে দিচ্ছে। এই আন্দোলনে নারীদের ব্যবহার করছে তারা।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আন্দোলনকারীরা হলে হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের জোর করে কর্মসূচিতে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। তারা সহিংস পথ বেছে নিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।