ইসলামি পরিভাষায় মহররম মাসের ১০ তারিখকে আশুরা নামে অভিহিত করা হয়। কারবালার হৃদয়বিদারক মর্মান্তিক ঘটনা আশুরা ও মহররমের ইতিহাসে নবচেতনার উন্মেষ ঘটিয়েছে এবং মহররম ও আশুরাকে আরও বেশি মহিমান্বিত ও অবিস্মরণীয় করে রেখেছে। ১৪৪৬ হিজরির পবিত্র মহররম মাসের চাঁদ দেখা এবং আশুরার তারিখ নির্ধারণে আজ শনিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী ফরিদুল হক খান।
বাংলাদেশের আকাশে কোথাও মহররম মাসের চাঁদ দেখা গেলে তা ০২-২২৩৩৮১৭২৫, ০২-৪১০৫০৯১২, ০২-৪১০৫০৯১৬, ০২-৪১০৫০৯১৭ টেলিফোন ও ০২-২২৩৩৮৩৩৯৭, ০২-৯৫৫৫৯৫১ ফ্যাক্স নম্বরে বা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) বা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) জানানোর অনুরোধ জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
আশুরার ইতিহাস: আশুরার উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলির মধ্যে রয়েছে—হজরত আদম (আ.)-এর সৃষ্টি, স্থিতি, উত্থান ও পৃথিবীতে অবতরণ। হজরত নূহ (আ.)-এর নৌযানের যাত্রারম্ভ এবং বন্যা অবস্থার সমাপ্তি ছিল আশুরাকেন্দ্রিক।
হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর নমরুদের অগ্নিকুণ্ড থেকে মুক্তি পাওয়া, হজরত ইউনুছ (আ.)-এর মাছের পেট থেকে মুক্ত হওয়া, হজরত দাউদ (আ.)-এর জালুত বাহিনীর ওপর বিজয় লাভ করা, হজরত আইয়ুব (আ.)-এর ১৮ বছর অসুস্থতার পর রোগমুক্ত হওয়া, হজরত ঈসা (আ.)-কে আসমানে তুলে নেওয়াসহ বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী আশুরা। (তাফসিরে তাবারি, ইবনে জারির)।
কোরআন কারিমে রয়েছে, ‘আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা ১২—এর মধ্যে ৪টি মাস সম্মানিত।’ (সুরা-৯ তওবা, আয়াত: ৩৬)। হাদিস শরিফে মহররমকে ‘শাহরুল্লাহ’ বা ‘আল্লাহর মাস’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে ‘অতিসম্মানিত ও মর্যাদাপূর্ণ চার মাস’ বলতে জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব—এই চার মাসকে বোঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাজহারি, সুরা-৯ তওবা, আয়াত: ৩৬)।
সৃষ্টির আদি থেকে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে আশুরার তাৎপর্য স্বীকৃত। হিজরি সনের প্রবর্তন মহররম মাসকে আরও বেশি স্মরণীয় করেছে।