ক্যারিয়ারের শেষ ইউরো খেলছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচ জয়ের পর এমনটিই জানিয়েছেন তিনি। তবে শেষটা রাঙানোর বিপরীতে নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন ‘সিআর সেভেন’।
সবশেষ মৌসুমে গোলের বন্যা বইয়ে দেওয়া রোনালদো ইউরোতে এখনো গোলের দেখা পাননি।
উল্টো স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে পেনাল্টি মিস করে খলনায়ক বনে যাচ্ছিলেন ৩৯ বছর বয়সী তারকা। মিস করার পর শিশুর মতো অঝোরে কাঁদছিলেন তিনি। শেষে তার সেই কান্না মুছে দিয়েছেন পর্তুগালের গোলরক্ষক ডিয়েগো কস্তা।টাইব্রেকারে স্লোভেনিয়ার টানা তিন শট ঠেকিয়ে পর্তুগালকে শেষ আটে তুলেছেন কস্তা।
এবার কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ শিরোপার অন্যতম দাবিদার ফ্রান্স। কিলিয়ান এমবাপ্পে-আতোঁয়ান গ্রিজম্যানদের নিয়ে সাজানো শক্তিশালী ফ্রান্সকে নিয়ে যখন কৌশল তৈরির কাজে মনোযোগ দেওয়ার কথা রোনালদোর ঠিক তখনই শাস্তির মুখে পড়েছেন পাঁচবারের ব্যালন ডি অরজয়ী। নিয়ম বহিভূর্ত কাজ করায় শাস্তি পেতে পারেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকার নেওয়ার সময় রোনালদোর হৃৎস্পন্দন কেমন ছিল তা ম্যাচ শেষে জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ফিটনেস ট্র্যাকার প্রতিষ্ঠান হুপ।
টাইব্রেকার নেওয়ার সময় রোনালদোর স্পন্দন নাকি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কমে গিয়েছিল। পর্তুগিজ তারকার স্পন্দন ছিল প্রতি মিনিটে ১০০-এর আশেপাশে। সেই স্পন্দন পরে ব্রুনো ফার্নান্দেজের শট নেওয়ার সময় ১২৫ বিপিএম হয়েছিল। আর ম্যাচ জয়ী শট নেওয়া বের্নার্দো সিলভার সময় ১৮০ বিপিএম উঠেছিল।রোনালদোর শারীরিক অবস্থার তথ্যটি পাওয়া যায় হুপের তৈরি করা ৪.০ মডেলের ফিটনেস ট্র্যাকার যন্ত্রের সহায়তায়।
আল নাসরের স্ট্রাইকারের কব্জিতে এই যন্ত্র সেট করা হয়েছিল। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই এখন সমালোচনা তুঙ্গে। কারণ ইউরোর অফিসিয়াল স্পন্সরের বাইরে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের পণ্য প্রচার করা সম্পূর্ণ বেআইনি। হুপের এই প্রচারণা তাই ‘অ্যামবুশ মার্কেটিংয়ের’ অংশ।নিজেদের পণ্যের বাজার ধরতেই বেআইনিভাবে ইউরোর মতো টুর্নামেন্টকে ব্যবহার করেছে হুপ এমনটাই মনে করছেন ভিসা এবং কোকা কোলার গ্লোবাল স্পন্সরশীপের সাবেক প্রধান রিকার্দো ফোর্ট। এর শাস্তি হিসেবে রোনালদো এবং প্রতিষ্ঠানের জরিমানা করা দাবি তুলেছেন তিনি। রোনালদোর শারীরিক অবস্থার চার্টটি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে তিনি বলেছেন,‘চার্টটি আজ প্রচার করা হয়েছে। ইউরো ২০২৪ এ ক্রিস্টিয়ানো এবং হুপ অ্যামবুশ মার্কেটিং করেছে। এটা বেআইনি। খেলোয়াড় এবং কোম্পানি উভয়ের জরিমানা হওয়া উচিত।’
এমন বেআইনি কাজের শাস্তি হিসেবে অতীতে জরিমানা ও নিষেধাজ্ঞার নজিরও রয়েছে। ২০১২ ইউরোতে শাস্তি পেয়েছিলেন নিকলাস বেন্ডটনার। ডেনমার্কের সাবেক এই ফরোয়ার্ড গোল করার পর উদ্যাপনের সময় জার্সি উপরে তুলে প্যাডি পাওয়ার ব্র্যান্ডেড আন্ডারওয়ারের প্রচারণা চালিয়েছিলেন। যার শাস্তিস্বরূপ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা জরিমানা গুণতে হয়েছিল তাকে। সঙ্গে এক ম্যাচ নিষিদ্ধও হয়েছিলেন তিনি। এবার রোনালদোও একই রকম শাস্তির মুখে পড়েছেন। এখন দেখার বিষয় রোনালদোর ঘটনাটি তদন্ত করে উয়েফা শাস্তি দেয় কিনা। এখন পর্যন্ত অবশ্য এ নিয়ে কোনো মুখ খুলেনি উয়েফা কর্তৃপক্ষ।