Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

গৃহহীনদের আত্মমর্যাদা এনে দিয়েছে বিনামূল্যে সরকারি বাড়ি : প্রধানমন্ত্রী

আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে দেওয়া বাড়িগুলো গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের মাঝে আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা এনে দিয়েছে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এরই মধ্যে আমরা বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষকে বিনামূল্যে ঘর দিয়ে পুনর্বাসন করেছি। এতে তাদের জীবনে পরিবর্তন এসেছে। আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদাবোধ ফিরে এসেছে। একটি দেশকে উন্নত করতে হলে এর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

মঙ্গলবার (১১ জুন) সকালে গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় দেশের ১৮ হাজার ৫৬৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

 

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ঈদ উপহার হিসেবে এসব ঘরগুলো দিয়েছি। সরকারের লক্ষ্যই হচ্ছে দেশবাসীর সেবা করা। কারণ দেশের জনগণের আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা থাকায় তারা বার বার আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনে।

২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এককভাবে ২৩৩টি আসন প্রাপ্তির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছিল আমাদের ওপর। কাজেই যে মানুষগুলো আমাদের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছে তাদের সেবা করাই আমাদের দায়িত্ব।

সরকারপ্রধান বলেন, ঠিক আমার বাবা যেভাবে নিজেকে বাংলাদেশের জনগণের সেবক হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিলেন, সেভাবেই তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশের মানুষের সেবা করাকেই আমি কর্তব্য বলে মনে করি।

তিনি বলেন, লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত এই বাংলাদেশ কখনো পিছিয়ে থাকতে পারে না। এই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে যেতেই হবে। এ দেশের মানুষ ক্ষুধা-দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পাবে। প্রত্যেকটি মানুষের জীবন সুন্দর হবে- সেটাই আমাদের লক্ষ্য। যে লক্ষ্য বাস্তবায়নেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, কিছুদিন আগে যে ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাস (রিমেল) হয়ে গেল সেখানে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা তালিকা করেছি কোন কোন এলাকায় কতগুলো ঘর সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। কতগুলো আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। যাদের সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের আমরা ঘর তৈরি করে দেব। আর আংশিক ক্ষতিগ্রস্তদেরও আমরা ঘর পুনর্নির্মাণে সহায়তা করবো।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের পাশে আমরা আছি। প্রাথমিকভাবে যা যা প্রয়োজন তা করে যাচ্ছি এবং ঘর-বাড়ি যাদের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমি তাদের এটুকু বলতে চাই, আপনাদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। প্রত্যেকেই নতুন ঘর যেন পান, সেই ব্যবস্থা ইনশাল্লাহ আমি করে দেব এবং সেভাবেই আমরা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রত্যেক এলাকা থেকেই আমরা তথ্য সংগ্রহ করেছি এবং সে অনুযায়ী আমরা এই সহায়তা পাঠাব।

প্রধানমন্ত্রী এদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মিথ্যা মামলায় কারাভোগ থেকে মুক্তি পাওয়ায় দিনটিকে তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতেও মিথ্যা মামলা দিয়েছিল। আবার সেই সময়কার যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এসেছিল তারাও গ্রেপ্তার করে পরে মিথ্যা মামলা দেয়।

তিনি এই সময় আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের সব নেতা-কর্মী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াইকারী-প্রতিবাদী সাধারণ জনগণকে স্মরণ করে ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন,  ঢাকা শহরে ১৫ দিনের মধ্যে ২৫ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করে আমাদের মহানগর আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপদেষ্টার অফিসে পৌঁছে দেয়। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচন দিতে বাধ্য হয় এবং মঙ্গলবার (১১ জুন) আমি সেই বন্দিখানার থকে মুক্তি পাই। তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূমিকাও এই সময় স্মরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা, কক্সবাজারের ঈদগাও উপজেলা এবং ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে সুবিধাভোগীদের মাঝে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জমির মালিকানা দলিলসহ বাড়ি হস্তান্তর করেন। পরে তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেন।

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পঞ্চম পর্বের দ্বিতীয় ধাপে এদিন ১৮ হাজার ৫৬৬টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে বাড়ি হস্তান্তরের পাশাপাশি ২৬ জেলার সব উপজেলাসহ আরও ৭০টি উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষ মুক্ত ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা ।

নতুন ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত জেলা ও উপজেলা নিয়ে সারাদেশে জেলার মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৮টি এবং উপজেলা হয়েছে ৪৬৪টি।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top