Sunday , 22 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

মোদির শপথে থাকবেন ৮ হাজার অতিথি, যাদের নিয়ে চলছে আলোচনা

রবিবারই তৃতীয়বার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদি। শুধু তিনি একা নন, তার সঙ্গে শপথ নিতে পারেন নতুন মন্ত্রিসভার আরো কয়েকজন। সেই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সাজ সাজ রব দিল্লিতে। সেজে উঠছে রাষ্ট্রপতি ভবনের উঠান।

মোদির শপথ অনুষ্ঠানের অতিথি তালিকা নিয়েও কৌতূহল শুরু হয়েছে। দেশ-বিদেশের বহু নেতাই ওই অনুষ্ঠানের শোভা বৃদ্ধি করবেন বলে জানা গেছে। সেই তালিকায় যেমন রয়েছেন দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রনেতা, তেমনই আছেন দেশের নানা ক্ষেত্রে সফল ব্যক্তিবর্গ। পরিচ্ছন্নতাকর্মী থেকে রূপান্তরকামী।
এ তালিকা অনেক লম্বা।এদিকে সেই তালিকায় দুটি নাম নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রথম জন হলেন ঐশ্বর্যা এস মেনন। আট হাজার অতিথির তালিকায় রয়েছেন তিনিও।

পেশায় তিনি লোকো পাইলট। বর্তমানে ঐশ্বর্যা বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালান। বন্দে ভারত ছাড়াও জন শতাব্দীর মতো এক্সপ্রেসও অনায়াসেই ছোটান ঐশ্বর্যা। ভারতের দক্ষিণ রেলওয়ের চেন্নাই বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী লোকো পাইলট তিনি। চেন্নাই থেকে বিজয়ওয়াড়া বা চেন্নাই থেকে কোয়ম্বত্তূর বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের চালকের কেবিনে প্রায়ই তাকে দেখা যায়।
কর্মজীবনে তাঁর তৎপরতা, সতর্কতা ও রেলওয়ের সিগন্যালিং সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞানের জন্য সব সময়ই প্রশংসিত হন ঐশ্বর্যা। তার সুদক্ষ হাতে যাত্রীরা সব সময়ই সুরক্ষিত।শুধু একা ঐশ্বর্যা নন, অতিথি তালিকায় থাকা সুরেখা যাদবকে নিয়েও আলোচনা চলছে। তিনিই এশিয়ার প্রথম নারী লোকো পাইলট। বন্দে ভারতের মতো সেমি হাই স্পিড ট্রেন চালানোর দায়িত্ব তার কাঁধেই রয়েছে। মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার বাসিন্দা সুরেখা। ১৯৮৮ সালে ট্রেনের চালক হিসেবে নিজের কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি। মেয়েরাও যে ট্রেন চালাতে পারেন, সেই ধারণার অন্যতম বাহক সুরেখাই।

এশিয়ায় সুরেখাই প্রথম নারী, যিনি লোকো পাইলট হন। অনেক মেয়ের কাছেই তিনি অনুপ্রেরণা। তাকে দেখে অনেক মেয়েই এই পেশায় কাজ করতে এগিয়ে এসেছেন। ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ প্রথম বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালিয়ে ইতিহাস তৈরি করেন সুরেখা। সোলাপুর থেকে মুম্বাই বন্দে ভারত চালান তিনি। সুরেখাই প্রথম নারী হিসেবে বন্দে ভারত চালিয়েছেন। তারপর বেশ কয়েকজন নারী লোকো পাইলটই বন্দে ভারত চালান। সেই তালিকায় আছেন ঐশ্বর্যা।

সুরেখা, ঐশ্বর্যা ছাড়াও অনেকেই রবিবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। রেল, মেট্রোকর্মীদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের একটা অংশ মোদির শপথ অনুষ্ঠানে থাকবেন।

দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। সেই তালিকায় রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে। এ ছাড়াও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে নেপাল, ভুটান ও মরিশাসের প্রধানমন্ত্রীদের।

এদিকে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজুকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে রবিবারের অনুষ্ঠানে। সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, এমন ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের সাক্ষী থাকার সুযোগ পেয়ে তিনি কৃতজ্ঞ। গত নভেম্বর মাসে মালদ্বীপের ক্ষমতায় এসেছেন মুইজু। তিনি চিনপন্থী ও ভারতবিরোধী হিসেবে পরিচিত। তার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্যের অভিযোগও উঠেছিল মুইজুর তিন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। তারপর ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মালদ্বীপ বয়কটের ডাক ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে মুইজুকে আমন্ত্রণ ও তার উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরাও উপস্থিত থাকতে পারেন। এ ছাড়াও চলচ্চিত্র জগৎ, খেলা, শীর্ষ স্থানীয় শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরাও এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেয়েছেন।

অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও ২০১৪ ও ২০১৯ সালের মতো এবার বিজেপি এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। তাই সরকার গড়তে এনডিএর অন্যান্য শরিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে মোদি-শাহদের। তবে তৃতীয়বারের জন্য সরকার গড়ার ব্যাপারে আশাবাদী মোদি। শুক্রবারই এনডিএর সংসদীয় নেতা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে তাকে। শরিকরা সর্বসম্মতভাবে মোদির নামে সমর্থন জানিয়েছেন।

এরপর শুক্রবার বিকেলেই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে গিয়ে তৃতীয়বার সরকার গঠনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জানিয়েছেন মোদি। সেই মতো রবিবার রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top