Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

ঈদযাত্রায় যেন বাড়তি ভাড়া আদায় না হয়, সে বিষয়ে তৎপর থাকতে হবে: ওবায়দুল কাদের

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া যেন কেউ আদায় করতে না পারে, সে বিষয়ে তৎপর থাকতে হবে। ঢাকার বাস টার্মিনালগুলোর বাইরে যেন কোনও বাস দাঁড়িয়ে না থাকতে পারে, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ঈদের আগে-পরে মিলিয়ে সিএনজি স্টেশন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার জন্য পদক্ষেপ নিতে জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

 

গত ঈদুল ফিতরে যানজটের ভোগান্তি এক দিন হয়েছিল। সেটি ছিল পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের ছুটির দিন। ধাপে ধাপে পোশাকশিল্পের শ্রমিকদের ছুটি দেওয়ার বিষয়টি বলা হলেও তা মানে না মালিকপক্ষ। সাংবাদিকদের এ ধরনের প্রশ্নে কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেছেন, এক দিন একটু সমস্যা হোক না, হোক। বাড়ি যাবে (লোকজন) আনন্দ করে, সেখানে এক দিন কষ্ট হলো, তাতে কী আসে–যায়। একদিন একটু কষ্ট হোক না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, গার্মেন্টস ছুটি দিলে হাজারো শ্রমিক রাস্তায় নেমে যায়, যানজট বাড়ে। এ সময় গাজীপুর ও চন্দ্রায় বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। এছাড়া রাজধানীর হানিফ ফ্লাইওভার যানজটের আরেকটি বড় উৎস।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো মেরামতের কাজ ঈদের আগেই শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের। এছাড়া নতুন করে কোথাও কোনও ধরনের খোঁড়াখুঁড়ি করে যেন জনভোগান্তি সৃষ্টি না করা হয়, সেই বিষয়েও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

ঈদের সময় রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি না করতে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, বৃষ্টির সময় এসেছে, এখন কিসের খুঁড়াখুঁড়ি?  ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের খুঁড়াখুঁড়ির কাজ ঈদের সময় কঠোরভাবে বন্ধ রাখতে হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, কুমিল্লা থেকে ৫০ মিনিটের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছে যায়, কিন্তু ফ্লাইওভারে এক ঘণ্ট-দেড় ঘণ্টা যানজটে আটকা থাকতে হয়। এটা কেন হচ্ছে? সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে কথা বলে সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেন।‌ হেলমেট ছাড়া সিএনজি স্টেশনে যেন কেউ তেল দিতে না পারে, আমি মন্ত্রীর লোক, এমপির লোক এসব বলে যেন কেউ ছাড় না পায়।  ঢাকা শহরে লক্কড়-ঝক্কড় বাস দেখতে ভালো লাগে না। ফিটনেসবিহীন কোনও বাস যেন চলতে না পারে, এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

সভায় নেয়া সিদ্ধান্ত সমূহ

* প্রধান সড়কের পাশে যেন কোরবানির হাট না বসে।

* বিআরটিএ, পুলিশ কমিশনার, সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সওজ অধিদপ্তর, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে যাত্রী সাধারণের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা।

* দেশের সব বাস টার্মিনাল ও মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং সড়কপথে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, পকেটমার, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

* লক্কড়-ঝক্কড়, ফিটনেস বিহীন ও ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধ করা, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত মালামাল-যাত্রী পরিবহন না করা, নসিমন, করিমন, ইজিবাইক, থ্রি-হুইলার জাতীয় গাড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচল বন্ধ নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

* বিআরটিসি’র স্পেশাল ঈদ সার্ভিস, সিএনজি ফিলিং স্টেশন সার্বক্ষণিক খোলা রাখা, গার্মেন্টসসহ সব শিল্প, কল-কারখানার কর্মীদের পর্যায়ক্রমে ছুটির ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত।

* ঈদের দিনসহ এর আগের ৩ দিন ও পরের ৩ দিন মহাসড়কে পশুবাহী গাড়ি ছাড়া ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ রাখা। তবে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য-দ্রব্য, পচনশীল দ্রব্য, গার্মেন্টস সামগ্রী, ওষুধ, সার এবং জ্বালানি বহনকারী যানবাহন আওতামুক্ত রাখা।

সভায় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) নুর মোহাম্মদ মজুমদার, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগ, হাইওয়ে পুলিশ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআরটিএ, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top