আটা, ময়দা, জ্বালানিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মির। বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। সহিংসতায় আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। শুক্রবার (১১ মে) থেকে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছে তারা।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ২৪ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি (৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) ভর্তুকি ঘোষণা দেয়ার একদিন পর মঙ্গলবার (১৪ মে) আয়োজকরা বিক্ষোভ স্থগিত করে।
পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরে বিক্ষোভে নেতৃত্বদানকারীদের একজন শওকত নওয়াজ মীর। তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদের সব দাবি মেনে নিয়েছে।’ সহিংসতায় নিহতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
কাশ্মিরে গত সপ্তাহের শেষের দিক থেকে বিক্ষোভ-সহিংসতা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানকার কর্তৃপক্ষ মোবাইল পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। কাশ্মিরের স্কুল, গণপরিবহন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আঞ্চলিক রাজধানী মুজাফফরাবাদে পাকিস্তানের আধা-সামরিক বাহিনী রেঞ্জার্সের সদস্যদের মোতায়েন করে।
বিক্ষোভের ফুটেজে দেখা যায়, উভয়পক্ষ পরস্পরকে রড দিয়ে আঘাত করছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে।
কাশ্মিরের কর্তৃপক্ষ বলেছে, চলমান বিক্ষোভ-সহিংসতায় নিহত চারজনের মধ্যে পুলিশের এক কর্মকর্তাও রয়েছেন। পাকিস্তানের সামরিক হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি বলেছে, বিক্ষোভে যে চারজন নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্তত দু’জন সরাসরি গুলির আঘাতে প্রাণ হারিয়েছে।
৩৭ বছর বয়সী দোকানদার মুহাম্মদ কাসিম এএফপিকে বলেছেন, ‘প্রতিবাদকারীদের ওপর গুলি চালানো উচিত হয়নি (রেঞ্জার্সের)। আমরা কেবল নিজেদের অধিকারের দাবি তুলেছিলাম। এর বিনিময়ে গুলি পেয়েছি।’
কাশ্মিরের মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা গোষ্ঠী দ্য জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি প্রথম এই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল। বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সহিংসতায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মঙ্গলবার ‘কালো দিবস’ ঘোষণা করেছে গোষ্ঠীটি।