আরেক দফা বাড়ানো হচ্ছে বিদ্যুতের দাম। এবার প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম সর্বনিম্ন ৩৪ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ পয়সা পর্যন্ত বাড়াতে যাচ্ছে সরকার। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বিদ্যুতের এই নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
মঙ্গলবার (২৭ জানুয়ারি) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী।
বিদ্যুতে বর্তমানে সরকার বছরে ৪৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেয় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ভর্তুকি থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হবে। প্রতি ইউনিটে দাম বাড়ছে সর্বনিম্ন ৩৪ পয়সা। মার্চ মাস থেকেই বিদ্যুতের এই নতুন দাম কার্যকর হবে।
তিনি বলেন, আমরা এখন যে কাজটা করছি, খুবই অল্প পরিমাণে, ৩৪ পয়সা পার ইউনিট নিচের লেভেলে। আমাদের লাইফ লাইন গ্রাহক আছে প্রায় এক কোটি ৪০ লাখ, যারা চার টাকা করে কেনেন। আর উপরের দিকে যারা আছেন, ৭ টাকা করে তাদের চার্জ হয়। আমাদের উৎপাদন খরচ পড়ে গড়ে ১২ টাকা। সরকারের একটা বড় অংশ কিন্তু এখানে ভর্তুকি হিসেবে যোগ হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই ভর্তুকির পরিমাণ আরও বেশি বেড়েছে ডলারের দামের কারণে। আমরা যদি এটা সময় মতো সমন্বয়ে না যাই ধীরে ধীরে; আমাদের লক্ষ্য হলো আগামী তিন বছর আমরা এটাকে (বিদ্যুতের দাম) সমন্বয় করব। যাতে একটা সহনীয় পর্যায়ে থেকে সমন্বয় হয়, সেটার একটা ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। আমরা যাচ্ছি ৩৪ পয়সা, উপরের লেভেলে হয়তো ৭০ পয়সা; এভাবে আমরা দাম নতুন করে সমন্বয় করছি।
তিনি বলেন, আমাদের বুঝতে হবে, আমরা যে জ্বালানি ব্যবহার করি সেটা প্রাইসিংয়ের ওপর বিদ্যুতের দাম নির্ভর করে। আমরা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো যখন নিয়ে এসেছি, সেই সময় ডলারের যে মূল্য আর কয়লার যে দাম ছিল—তার থেকে অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। প্রতি ডলারে প্রায় ৪০ টাকার পার্থক্য হয়ে গেছে।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ৭০ থেকে ৮০ টাকা করে ডলারের মূল্য ধরেছিলাম, যখন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ছিল। এখন আমাদের মূল্য ধরতে হয় ১১০ টাকা; সরকারি। বেসরকারি তো আরও বেশি। সুতরাং এই গ্যাপটা আমাদের সমন্বয় করতে হবে। আমরা প্রাইস ইনক্রিজ কখন বলবো? যদি ব্রেক ইভেন্ট থেকে প্রাইস আমরা বাড়িয়ে দেই, তাহলে সেটাকে ইনক্রিজ বলা যায়। কিন্তু যখন আমরা জ্বালানির সঙ্গে সমন্বয় করতে যাব, সব দেশই তা করে—জ্বালানির মূল্যের সঙ্গে বিদ্যুতের দাম ওঠা-নামা করে। সুতরাং এটার সঙ্গে আমাদের সমন্বয় করতে হবে, এছাড়া উপায় নেই।
উল্লেখ্য, গত বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রতি মাসে ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ করে বাড়ানো হয়েছিল।