এক মেট্রোরেলই বদলে দিয়েছে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থা। প্রতিদিন মেট্রোরেলে যাতায়াত করছেন লাখো যাত্রী। এতে বেঁচে যাচ্ছে মূল্যবান সময় আর অর্থ। এবার মেট্রোরেলে সাধারণ যাত্রী হয়ে উঠলেন সরকারের নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম সচিবালয় থেকে মেট্রোরেলে আগারগাঁওয়ে গিয়ে অফিস করলেন তিনি। সাধারণ যাত্রীর মতো লাইনে দাঁড়িয়ে উঠলেন মেট্রোরেলে।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে নৌ প্রতিমন্ত্রীর মতবিনিময় সভা ছিল। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সচিবালয় মেট্রোস্টেশন থেকে সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে যাত্রা করেন নৌ প্রতিমন্ত্রী।
মতিঝিল থেকে আসা মেট্রোরেলে তখন পা ফেলার জায়গা নেই। যাত্রীপূর্ণ মেট্রোর একটি বগিতে শেষ পর্যন্ত অতিকষ্টে ওঠা সম্ভব হলো। পুরো কামড়া তখন যাত্রীতে ঠাসা। নড়াচড়া করার সুযোগ নেই। তবুও, মানুষের মনে স্বস্তি। কারণ, ভোগান্তিহীন এক শান্তির যাত্রা মেট্রোরেলে। নেই যানজট, হর্নের শব্দ। এসির ঠান্ডা বাতাসে দেখতে দেখতে পৌঁছে যান গন্তব্যে। ধীরে ধীরে কীভাবে বাংলাদেশ বদলে যাচ্ছে, সেটিই যেতে যেতে বলছিলেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার প্রতি নাগরিক হিসেবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আগে সচিবালয় থেকে আগারগাঁওয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করলেই মন খারাপ হয়ে হয়ে যেত। এখন সেটা আনন্দের বিষয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোনার বাংলা গড়ে তোলার যে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন, দিন বদলের চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন; আজকে বাংলাদেশ বদলে গেছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে আগারগাঁও চলে আসার বিষয়টি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আগে মতিঝিল থেকে মিরপুর পর্যন্ত যাতায়াতে যাত্রীর নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। এখন এই রোডে যানজট, যেটা নিত্যদিনের ছিল সেটা কিন্তু নেই। যাত্রীদের ভোগান্তিও নেই। মাত্র কয়েক মিনিটেই চলে যাচ্ছেন।
‘আমাদের মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা-কর্মচারীরা এখন মেট্রোরেলে যাতায়াত করেন। আগে যেখানে দুই ঘণ্টা লাগতো, এখন মাত্র ১০/১২ মিনিটে আগারগাঁও চলে যাচ্ছেন, দেড় ঘণ্টার মত সময় বেঁচে গেছে। যানজটে বসে থেকে একটা ক্লান্তি চলে আসত, এখন সেটা নেই।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখনই যেমন মিরপুর রোডে গণপরিবহনে যাত্রী নেই, চাপ নেই। আর এমআরটি লাইনের বাকিগুলো চালু হয়ে গেলে দেখবেন ঢাকার পরিবেশটাই সুন্দর হয়ে গেছে।
ঢাকাবাসীর জন্য মেট্রোরেল আশীর্বাদ উল্লেখ করে খালিদ মাহমুদ বলেন, আগামী দুই তিন বছরের মধ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা যাবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে লক্ষ্যের কথা বলা হচ্ছে, মেট্রোরেল কিন্তু তারই একটি অংশ। এরপর দেখতে পারবেন যে ক্যাবল দিয়ে বুড়িগঙ্গা পার হচ্ছে মানুষ।
১৫ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, তা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা কিন্তু তা-ই বলছেন। আজকে রাজনৈতিক কমিটমেন্টের জায়গা তৈরি হয়েছে। সরকারপ্রধান নিজেই নিজেই কমিডেট যে, আমি জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে চাই। দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়তে চাই। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সেই লক্ষ্যে পৌঁছাবো ইনশাল্লাহ।
পরে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী মেট্রোরেলের আগারগাঁও স্টেশনে নেমে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে সেখানে যান।