২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা নৌকার মাঝি হয়ে সংসদে বসেছিলেন, এবার তাদের কেউ কেউ বাদ পড়ছেন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে কারা ভোটের মাঠে নামবেন, তা জানা যাবে শনিবার।
ওই দিন মনোনয়ন প্রাপ্তদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মনোনয়ন বোর্ডে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ নিয়ে বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “কারা মনোনয়ন পাবেন তাদের নাম ২৫ নভেম্বর ঘোষণা হবে। বৃস্পিতিবার রংপুরের ৩৩ ও রাজশাহীর ৩৯টি মিলিয়ে মোট ৭২টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।
“আমরা সব আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত না হওয়ার পর্যন্ত ফল প্রকাশ করব না। একসঙ্গে আমাদের মনোনয়ন আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করব। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ১০ পর্যন্ত সভা মুলতবি করা হয়েছে।”
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর চারদিনে ৩ হাজার ৩৬২টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
৩০০টি আসনের বিপরীতে বিপুল পরিমাণ এই আবেদন থেকে বৃহস্পতিবার দুই বিভাগের সংসদীয় আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। এজন্য সকালে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় যোগ দেন বোর্ডের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রথম বৈঠকে যাদের চূড়ান্ত করা হয়েছে তাদের নাম এখনই প্রকাশ করছে না আওয়ামী লীগ। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা নৌকার মাঝি হয়ে সংসদে বসেছিলেন, তাদের কেউ কেউ এবার বাদও পড়ছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “আজকে আমাদের মনোনয়ন বোর্ডের যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার মধ্যে রাজনীতিকের বাইরে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে আমার জানা নেই। বর্তমান সংসদ সদস্য কয়জন বাদ পড়ছেন এই মুহূর্তে আমি বলতে পারছি না, তবে বাদ পড়েছে।
“প্রার্থী বাছাই ক্ষেত্রে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৫ নভেম্বর প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করা হবে।” বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “আগে আমরা দেখি কারা বিদ্রোহ করে, তারপর সিদ্ধান্ত নেব।
“নির্বাচন ঘিরে সারা দেশে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজমান। জোট হবে বিভিন্নভাবে, কার সঙ্গে কার জোট হবে, কোথায় গিয়ে ঠেকবে বলা মুশকিল। জোট হতেও পারে নির্বাচনের আগে, সময় আছে। কাজেই তালিকাও আসতে পারে। এমন হতে পারে আপনিও ভাবছেন না, আমিও ভাবছি না। কিন্তু কার সাথে কার জোট হয় কেউ ভাবতে পারে না।”
গত শনিবার থেকে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময়সীমা ছিল। চারদিনে ঢাকা বিভাগে ৭৩০টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৫৯টি, সিলেট বিভাগ ১৭২টি, ময়মনসিংহ বিভাগ ২৯৫টি, বরিশাল বিভাগে ২৫৮টি, খুলনা বিভাগে ৪১৬টি, রংপুর বিভাগে ৩০২টি ও রাজশাহী বিভাগে ৪০৯টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়। এতে দলটির আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর; বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর।
রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি তারিখ ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর।