আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আলুর বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, দেশে আলুর কোনো ঘাটতি নেই কিন্তু একটি ‘অদৃশ্য হাত’ আলুর বাজারকে অস্থির করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া দাম অনুযায়ী ভোক্তাপর্যায়ে আলুর দাম বাস্তবায়ন করতে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে অধিদপ্তর
শনিবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুরে রিভারভিউ কোল্ড স্টোরেজ পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
সফিকুজ্জামান বলেন, আলুর বিক্রির ক্ষেত্রে ক্রেতা-বিক্রেতার পাকা রশিদ ব্যবহার করতে হবে। পাকা রশিদ না থাকলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেয়া দাম অনুযায়ী ভোক্তা পর্যায়ে আলু দাম বাস্তবায়ন করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
মহাপরিচালক মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুরে রিভারভিউ কোল্ড স্টোরেজ থেকে ১০ হাজার বস্তা আলু জব্দ করেন এবং পাকা রশিদ ছাড়া মোবাইলে দাম নির্ধারণ করে আলু বিক্রি করার অভিযোগে রসরাজ বাবু নামের ওই ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আলু ব্যবসায়ী রসরাজের কথায় অসঙ্গতি থাকায় এবং পাকা রশিদ ছাড়া আলু বিক্রি করায় হিমাগারে তার সংরক্ষিত আলু হেফাজতে নিয়ে ২৭ টাকা মূল্যে সেই আলু বিক্রি করে দাম বুঝিয়ে দেয়ার জন্য তিনি স্থানীয় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে দায়িত্ব দেন।
মুন্সিগঞ্জের রিভারভিউ কোল্ড স্টোরেজ পরিদর্শন শেষে কথা বলেন ভোক্তার ডিজি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান । ছবি: সংগৃহীত
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মুন্সিগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর রিপন ও পুলিশ মো. আসলাম খান।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) খুচরা পর্যায়ে আলুর দাম কেজিপ্রতি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং হিমাগার পর্যায়ে ২৬ থেকে ২৭ টাকা বেঁধে দিয়েছে সরকার। তবে এটা মানছেন না ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মৌসুমের শুরুতে তারা যে আলু রাখেন, সেগুলো প্রতিবছর মে মাসের পর হিমাগার থেকে বের করেন। এবার আলুর সংকট থাকায় এপ্রিল মাস থেকেই আলু বের করা শুরু হয়েছে। এ জন্য হিমাগারে আলুর সংকট আছে। মজুত রাখা আলু ২৫ থেকে ২৬ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। মজুত করা আলু শেষ হয়ে যাওয়ার পর কৃষকদের কাছ থেকে চড়া দরে তাঁরা আলু কিনে রেখেছেন। এখন সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি করতে গেলে কেজিতে ৮ থেকে ৯ টাকা করে লোকসান গুনতে হবে। এ জন্য তাঁরা আলু বিক্রি করছেন না। সরকারি লোকজন বেশি চাপাচাপি করলে এক সপ্তাহ তারা আলু বিক্রি বন্ধ রাখবেন।
এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, আলু বিক্রি বন্ধ রাখা নীতি-নৈতিকতার ব্যাপার। সবাই হয়তো কাজটি করবেন না। যারা করবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হিমাগার মালিক ও ব্যবসায়ীদের দাবি, হিমাগারে যে পরিমাণ আলু মজুত আছে, ডিসেম্বরের আগেই তা শেষ হয়ে যাবে। এতে দেশে আলুর সংকট তৈরি হবে।