আগামী সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ দেড়শ আসনে ইলেক্ট্রনিট ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের জন্য প্রস্তাবিত প্রকল্পে সায় দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। অনুমোদন দেওয়া আট হাজার ৭১১ কোটি টাকার প্রকল্পের আওতায় প্রায় দুই লাখ ইভিএম কেনা হবে। এছাড়া ইভিএম সংরক্ষণ জনবল তৈরি ও প্রশিক্ষণের জন্য এখানে ব্যয় রাখা হয়েছে।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নির্বাচন কমিশন ভবনে ইসির কমিশন বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে নতুর প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এখন এটি পাঠানো হবে পরিকল্পনা কমিশনে। তবে এর আগে জনবলের বিষয়টি অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাজ আছে।
আলমগীর বলেন, আপনারা জানেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ দেড়শ আসনে ইভিএমে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আমাদের কাছে যত ইভিএম আছে তা দিয়ে সর্বোচ্চ ৭০ থেকে ৭৫টি আসনে ভোট করা সম্ভব। তাই নতুন করে ইভিএম কিনতে একটি প্রকল্প তৈরি করতে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে বলা হয়েছিল। তারা যে প্রস্তাব দিয়েছিল তাতে কিছু তথ্যের ঘাটতি ছিল। তাই আগের বৈঠকে বলা হয়েছিল যাতে প্রকল্প ফেরত না আসে সেসব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য। আজকে সেসব তথ্যসহ জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা এটা দেখেছি।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আপত্তির মধ্যেই গত ২৩ আগস্ট নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেয় আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় অর্ধেক আসনে ইভিএমে ভোট নেওয়া হবে। ভোট গ্রহণের এই যন্ত্রটি ব্যবহারে অনেক রাজনৈতিক দলই সংলাপসহ বিভিন্ন সময় নেতিবাচক মন্তব্য করেছে। সেসব উপেক্ষা করেই জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর ধারাবাহিক সংলাপে অংশ নেয় ২৮ দল। এরমধ্যে ৩০০ আসনে ইভিএম চেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দুটি দল শর্তসাপেক্ষে আর ১৪টি দল ইভিএমের পক্ষে মত দিয়েছে। বিরোধিতা করেছে বাকি দলগুলো। এর আগে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে সংলাপেও ইভিএমের বিরুদ্ধে মতের পাল্লা ভারী ছিল
সবশেষ অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ছয়টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় ইভিএমের মাধ্যমে। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচন ইভিএমে অনুষ্ঠিত হয়। সবশেষ গত জুনে অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে সব কেন্দ্রেই ইভিএমে ভোট নেওয়া হয়। যদিও এই যন্ত্রটির ব্যাপারে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর রয়েছে তীব্র আপত্তি।