রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় ১০তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে সানজানা (২১) নামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার আগে একটি চিরকুটে ওই ছাত্রী তার বাবাকে ‘অত্যাচারী’ ও ‘রেপিস্ট’ বলে উল্লেখ করেছেন।
শনিবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে দক্ষিণখান মোল্লারটেক এলাকার একটি ১০তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিকালে তিনি মারা যান।
নিহতের বাবা শাহীন ইসলাম দ্বিতীয় বিবাহ করার পর থেকে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের ওপর নির্যাতন করে আসছে বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষার্থীর স্বজনরা। সকালে বাবার কাছে সেমিস্টার ফাইনালের জন্য টাকা চাইলে তাকে মারধর করেন বাবা। সানজানা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন।
দক্ষিণখান থানা সূত্রে জানা যায়, আত্মহত্যার আগে মেয়েটি তার বাবা শাহীন ইসলামের বিরুদ্ধে একটি সুইসাইড নোট লিখে গেছেন।
সুইসাইড নোটে তিনি লিখেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য আমার বাবা দায়ী। একটা ঘরে পশুর সাথে থাকা যায়। কিন্তু অমানুষের সাথে না। একজন অত্যাচারি রেপিস্ট যে কাজের মেয়েকেও ছাড়ে নাই। আমি তার করুণ ভাগ্যের সূচনা।’
পুলিশ শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে। রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশীদ।
তিনি বলেন, ‘শনিবার দুপুরে কাপড় শুকানোর জন্য বাসার সিকিউরিটির কাছ থেকে চাবি নিয়ে ছাদে গিয়ে ওই ছাত্রী ১০তলা ভবন থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে আত্মহত্যা করেন।’
তিনি আরও বলেন, নিহত শিক্ষার্থী সানজানার বাবা শাহীন আলম গত পাঁচ বছর আগে তাদের না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। কয়েকদিন আগে দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জানাননি হলে দুই পরিবারের মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়। এরপর সানজানার মা গত দুই মাস আগে সানজানার বাবাকে ডিভোর্স দেন। এজন্য তার বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ফিসহ আনুসঙ্গিক খরচাদি দিতেন না বলে জানা গেছে।
মেয়েটির মানসিক সমস্যা ছিল উল্লেখ করে ওসি বলেন, ‘তার কিছু প্রেসক্রিপশন পেয়েছি। মার্চেও মানসিক রোগের জন্য তিনি চিকিৎসা নিয়েছিলেন। তাতে তার আত্মহত্যার প্রবণতা আছে বলে দেখা গেছে।’
আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান ওসি মামুনুর রশীদ।