Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

কারা জান্নাতি এবং জাহান্নামি মানুষ

থিবী মুমিনের আসল ঠিকানা নয়; বরং জান্নাতই তার একমাত্র ঠিকানা। একজন প্রবাসীর মনটা যেমন স্বদেশে যেতে সর্বদা ছটফট করে, তেমনি একজন প্রকৃত মুমিনের মনও সদা জান্নাতে যেতে ব্যাকুল থাকে।

হাদিসে মহানবি (সা.) দুনিয়াকে মুমিনের জেলখানা বলে আখ্যায়িত করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘পৃথিবী মুমিনের জেলখানা এবং কাফেরের জন্য জান্নাত।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৪১১৩)।

ভালো-মন্দ প্রতিটি কাজই মানব জীবনে প্রভাব ফেলে। ভালো কাজ জান্নাতের পথকে সুগম করে আর খারাপ কাজ মানুষকে জাহান্নামের দিকে টেনে নিয়ে যায়। প্রকৃত মুমিন সর্বদা ভালো কাজ করে এবং অন্যকেও সে ভালো কাজের প্রতি উৎসাহিত করে। আর কাফের সর্বদা মন্দ কাজে লিপ্ত থাকে এবং অন্যকেও এ কাজে উৎসাহ প্রদান করে। যারা নেক আমল করে, নেক আমল করাই যাদের স্বভাব, তারা জান্নাতি :

আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেন, ‘যারা ইমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তারাই জান্নাতের অধিবাসী। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।’ (সূরা বাকারা : ৮২)।

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ভালো কাজ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ এবং তার চেয়েও বেশি। সেদিন তাদের চেহারাকে স্পর্শ করবে না মলিনতা কিংবা অপমান। তারাই হবে জান্নাতের অধিবাসী, তারা সেখানে থাকবে চিরকাল।

কিন্তু যারা মন্দ কাজ করেছে, তাদের মন্দের প্রতিফল মন্দের মতোই হবে, অপমান তাদের আচ্ছন্ন করে ফেলবে; সেদিন আল্লাহর আজাব থেকে তাদের রক্ষাকারী কেউ থাকবে না। তাদের চেহারা এমন কালো হবে, যেন তাদের মুখমণ্ডলকে ঢেকে দেওয়া হয়েছে আঁধার রাতের টুকরো দিয়ে। এরা হচ্ছে জাহান্নামের অধিবাসী। এরা সেখানে অনন্তকাল থাকবে।’ (সূরা ইউনুস : ২৬-২৭)।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তারা কখনো কোনো অশ্লীল কাজ করে ফেললে কিংবা কোনো মন্দ কাজে জড়িত হয়ে নিজের ওপর জুলুম করে ফেললে, আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করবে? তারা নিজেদের কৃতকর্মের জন্য হঠকারিতা প্রদর্শন করে না এবং জেনে-শুনে তা-ই করতে থাকে না। তাদের জন্য প্রতিদান হলো পালনকর্তার ক্ষমা ও জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হচ্ছে প্রস্রবণ-যেখানে তারা থাকবে অনন্তকাল। যারা সৎকাজ করে তাদের জন্য কতই না চমৎকার প্রতিদান!’ (সূরা আলে-ইমরান : ১৩৫-১৩৬)।

‘অনন্তর যে সীমালঙ্ঘন করে এবং পার্থিব জীবনকে অগ্রাধিকার দেয় জাহান্নামই হবে তার আবাস। পক্ষান্তরে যে তার রবের সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় করে এবং কুপ্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখে জান্নাতই হবে তার ঠিকানা।’ (সূরা নাজিয়াত : ৩৭-৪০)।

হাদিসে পাকে এসেছে, ‘তিন শ্রেণির মানুষ জান্নাতি। ১. রাষ্ট্রের কর্ণধার, ন্যায়পরায়ণ, সত্যবাদী এবং নেক কাজের সুযোগ লাভে ধন্য লোক। ২. দয়ালু, আত্মীয়স্বজন ও মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি কোমলচিত্ত লোক। ৩. পূতপবিত্র চরিত্রের অধিকারী, ভিখারি নয় এবং সন্তানাদি সম্পন্ন লোক। আর পাঁচ ধরনের মানুষ জাহান্নামি। ১. এমন দুর্বল মানুষ, যাদের মাঝে পার্থক্য ক্ষমতা নেই, যারা তোমাদের এমন তাঁবেদার যে, না তারা পরিবার-পরিজন চায়, না ধনসম্পদ। ২. এমন খেয়ানতকারী, যে সাধারণ বিষয়েও খেয়ানত করে, যার লোভ-লালসা কারও অজানা নয়। ৩. যে ব্যক্তি তোমার পরিবার-পরিজন এবং ধনসম্পদের ব্যাপারে তোমার সঙ্গে সকাল-সন্ধ্যা প্রতারণা করে। ৪. কৃপণ। ৫. মিথ্যাবাদী।’ (সহিহ মুসলিম : ৭০৯৯)। আল্লাহ আমাদের সবাইকে জান্নাতি মানুষের গুণ অর্জনের তাওফিক দান করুন।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top