Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

বিশাল জয়ে সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশ

প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩ রানের জয়। নাহলে আবারও সমীকরণের জটিলতায় পড়তে হতো। কিন্তু সুপার টুয়েলভে যাওরার পথে এসবের কোনো সুযোগই রাখলেন না সাকিব-মাহমুদউল্লাহরা। প্রথম রাউন্ডে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে আজ উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। শক্তিতে অনেক পিছিয়ে থাকা দলটির বিপক্ষে ৮৪ রানে এসেছে বিশাল জয়। এর মাধ্যমেই সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করে ফেলল টিম টাইগার।

রান তাড়ায় নামা পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে শুরুতেই পেসারদের নামিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। সাইফউদ্দিন আর মুস্তাফিজকে দিয়ে শুরু হয় আক্রমণ। প্রথম সাফল্য দেন সাইফ। তার করা তৃতীয় ওভারের তৃতীয় বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েন লেগা সাইকা (৫)। ১১ রানে পিএনজির প্রথম উইকেট পতন হয়। দুই রানের ব্যবধানে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটান তাসকিন। চতুর্থ ওভারে তার বলে অধিনায়ক আসাদ ভালার (৬) অসাধারণ ক্যাচটি নেন নুরুল হাসান সোহান। এরপরে মঞ্চে আবির্ভাব সাকিবের।

পঞ্চম ওভারে বোলিংয়ে এসেই শিকার ধরেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার। তার প্রথম বলে ক্যাচ তুলে দেন চার্লস আমিনি (১)। লং অনে দুর্দান্ত দক্ষতায় ক্যাচটি তালুবন্দি করেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। চতুর্থ বলে সাকিবের শিকার নতুন ব্যাটসম্যান সাইমন আতাই। স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন স্কয়ার লেগে। শেখ মেহেদি ক্যাচ নিতে ভুল করেননি। ১১ থেকে ১৪ রানের মাঝে ৪টি উইকেট হারায় পাপুয়া নিউগিনি।

ইনিংসের ৯ম ওভারে সিসি বাউ সাকিবের বলটি লং অনে উড়িয়ে মেরেছিলেন। সীমানার কাছে ক্যাচ নেন নাঈম। পরের ওভারে এসে সাফল্য পান মেহেদি। স্কয়ার লেগে নরমম্যান ভানুয়ার (০) ক্যাচ নেন ব্যাট হাতে ব্যর্থ হওয়া মুশফিকুর রহিম। ১১তম ওভারে নিজের শেষ ওভারটি করতে আসেন সাকিব। তৃতীয় বলে হিরি হিরিকে (৮) সোহানের গ্লাভসবন্দি করে নিজের চতুর্থ শিকার ধরেন। ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে সাকিবের শিকার ৪টি। পিএনজির পরাজয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

প্রথম সাত ব্যাটসম্যান দুই অংক ছুঁতেই পারেননি। ৮ম ব্যাটসম্যান কিপলিন ডরিগা এবং ৯ম ব্যাটসম্যান চাদ সোপার লড়াইয়ের চেষ্টা করেন। ১৫তম ওভারের পঞ্চম বলে চাদ সোপারকে (১১) বোল্ড করে নিজের দ্বিতীয় শিকার ধরেন সাইফউদ্দিন। ৫৪ রানে ৮ম উইকেট পতন হলে ভাঙে ২৫ রানের জুটি। উইকেটকিপার ডরিগা যেন আউট না হওয়ার পণ করেছেন। ৩ রান করে রান-আউট হন কাবুয়া মোরিয়া।

এর আগে মাসকাটের আল আমেরাত ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮১ রান তোলে বাংলাদেশ। যদিও শুরুটা ভালো হয়নি। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই কাবুয়া মোরিয়ার বলে ফ্লিক করতে গিয়ে মিডউইকেটে সিসি বাউয়ের তালুবন্দি হয়ে ফিরে যান মোহাম্মদ নাঈম (০)। এরপর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন লিটন দাস এবং সাকিব আল হাসান। দুজনের সাবলীল ব্যাটিংয়ে পাওয়ারপ্লেতে আসে ৪৫ রান। যেখানে আগের দুই ম্যাচে যথাক্রমে ২৫ ও ২৯ রান এসেছিল।

দুজনের জুটি যখন জমে গেছে, তখনই ছন্দপতন। ২৩ বলে ১ চার ১ ছক্কায় তার ২৯ রানের ইনিংস থামে আসাদ ভালার বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে সিসি বাউয়ের তালুবন্দি হয়ে। এরই সঙ্গে ভাঙে ৫০ রানের ওপেনিং জুটি। সাকিবের সঙ্গী হন মুশফিক। কিন্তু ফর্মহীনতায় ভোগা মুশফিক (৮ বলে ৫) আজও ব্যর্থ। সাইমন আতাইয়ের করা ১১তম ওভারেরর দ্বিতীয় বলে পুল করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন। দুইবারের চেষ্টায় ক্যাচ তালুবন্দি করেন হিরি হিরি।

বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান আজ বেশ মেজাজে ছিলেন। হাত খুলে মারার যে নির্দেশনা ছিল, তা পালন করার চেষ্টা করেন। তার ৩৭ বলে ৪৬ রানের ইনিংসে কোনো বাউন্ডারি না থাকলেও ছিল ৩টি ছক্কার মার। আসাদ ভালার করা ১৪তম ওভারে সাকিবের তুলে দেওয়া ক্যাচটি দুর্দান্তভাবে তালুবন্দি করেন চার্লস আমিনি। আগের বলেই ছক্কা মেরেছিলেন সাকিব। উইকেটে এসেই মারমুখী মেজাজে ধরা দেন মাহমুদউল্লাহ। তার সঙ্গী হন তরুণ আফিফ।

মাত্র ২৭ বলে ৩ চার ৩ ছক্কায় ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ ফিফটি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ। চলতি আসরে এখন পর্যন্ত এটাই দ্রুততম ফিফটি। অবশ্য ড্যামিয়েন রাভুর করা পরের বলেই তিনি সোপারের তালুবন্দি হয়ে ফিরেন। শেষদিকে আফিফ হোসেনের ১৪ বলে ৩ চারে ২১ আর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ৬ বলে ১৯* রানের ক্যামিওতে নির্ধারিত ২০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ১৮১ রান। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন কাবুয়া মোরিয়া, ড্যামিয়েন রাভু এবং আসাদ ভালা। ১টি নিয়েছেন সাইমন আতাই।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top