দিনাজপুরে স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রী ও তার কথিত প্রেমিককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। আজ রবিবার বিকেলে দিনাজপুর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আজিজ আহমদ ভুঞা এই রায় প্রদান করেন। দিনাজপুর আদালত পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন- দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার ভবানীপুর (ঘাসিপাড়া) এলাকার মৃত: মজিদ প্রামানিকের মেয়ে ফাহমিনা বেগম (৪৩) ও তার বিবাহ বর্হিভুত অবৈধ প্রেমিক ও কথিত ধর্মভাই একই উপজেলার নিয়ামতপুর নতুনবাজার এলাকার সুশিল রবিদাসের ছেলে মানিক রবিদাস ওরফে আর্ট মানিক (৪৫)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর সকালে জেলার পার্বতীপুর উপজেলা শহরের মোজাফফর হোসেন মহল্লার বাসিন্দা মুদী ব্যবসায়ী আবু ছালাম মোল্লার মরদেহ নিজ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় নিহতের বড়ভাই আবু হোসেন মোল্লা বাদী হয়ে পার্বতীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত চলাকালে আসামী ফাহমিনা বেগম স্বেচ্ছায় জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন।
তিনি উল্লেখ করেন যে তার স্বামী মৃত: আব্দুল ছালাম মোল্লা তাকে ও তার ধর্মভাই মানিক রবি দাসকে নিয়ে সন্দেহ করে এবং প্রথমে জমি লিখে দিতে চাইলেও পরে জমি লিখে দেয়নি। এই ক্ষোভে ঘটনার দিন ভোর ৪ টায় ফাহমিনা বেগম মোবাইল ফোনে মানিক রবি দাসকে ডেকে আনে। পরে দুইজনে মিলে লাইলনের রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আবু ছালাম মোল্লাকে হত্যা করে। পরে মরদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেয়। মামলা দায়েরের পর পুলিশ নিহতের স্ত্রী ফাহমিনা বেগম ও মানিক রবি দাসের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করে।
এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২১ জন স্বাক্ষী স্বাক্ষ্য প্রদান করেন। এছাড়াও আসামী ফাহমিনা বেগম নিজেই সাফাই সাক্ষী প্রদান করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এ্যাড. রবিউল ইসলাম ও আসামীপক্ষের আইনজীবী ছিলে এ্যাড. হযরত আলী বেলাল।