সিরাজগঞ্জে ‘পশুর হাট’ অ্যাপের মাধ্যমে ৩০ হাজার গরু বিক্রির পরিকল্পনা করেছে জেলা প্রশাসন। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়ানোর লক্ষ্যে গত বছর থেকে সিরাজগঞ্জে অনলাইনের মাধ্যমে কোরবানির পশুর হাটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসন।
ক্রেতারা ঘরে বসে অনলাইনে এই ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পশু কিনতে পারবেন। অ্যাপে খামারির নাম, পশুর ছবি, আকার, রঙ, ওজন, উচ্চতা, দাঁত, জাত, দাম, বয়স এবং মুঠোফোন নম্বর দেওয়া থাকবে। মূলত স্বাস্থ্যবিধি না মেনে পশুর হাটে ক্রেতাদের ভিড় জমানো নিরুৎসাহিত করতেই এই ডিজিটাল হাটের আয়োজন।
পশু ক্রয় বা বিক্রয় করার জন্য সব ধরনের তথ্য, নির্দেশিকা ও সহায়তা এ অ্যাপসটির মাধ্যমে পাবেন সব শ্রেণির পেশার মানুষ। খামারি জনগোষ্ঠীকে প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে স্মার্ট খামারি তৈরিতে ‘পশুর হাট’ অ্যাপটি যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে জেলার পশু পালন কর্মকর্তাদের সহায়তায় প্রান্তিক খামারিদের কাছ থেকে পশুর বিস্তারিত তথ্য সরাসরি দেওয়া হবে এই অ্যাপে। ফলে হাটে না গিয়েও নিজ নিজ এলাকার খামারিরা পশুর ছবি, ভিডিও, উচ্চতা, ওজন, বয়সসহ বিভিন্ন তথ্য দিয়ে অনলাইনে পশু বিক্রি করার সুযোগ পাবেন এর মাধ্যমে।
জানা গেছে, পশু বিক্রির ক্ষেত্রে দরকারি সব সুবিধাকেই এই অ্যাপের মধ্যে যুক্ত করা হয়েছে। আর এই অ্যাপের উদ্ভাবক সিরাজগঞ্জ জেলার সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (রেকর্ড রুম, জেলা-ই সেবা কেন্দ্র, আইসিটি শাখা) প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান।
মাসুদুর রহমান বলেন, ‘পশুর হাট’ অ্যাপটি শুধু কোরবানির ঈদের জন্য করা হয়নি, এই অ্যাপটি এমনভাবে ডেভেলপ করা, যেন এটি সারা বছরই আমাদের দেশের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে, প্রান্তিক পর্যায়ের সব খামারির (হাঁস, মুরগি, গরু-ছাগল) কথা মাথায় রেখে অ্যাপটি ব্যবহারের উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। গত বছরের চাইতে এ বছর অ্যাপটিতে আরো আধুনিক করা হচ্ছে। এ বছর ৩০ হাজার গরু বিক্রির পরিকল্পনা করে কাজ করা হচ্ছে। এজন্য আধুনিক অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। অ্যাপসে খামারির নাম, পশুর ছবি, আকার, রঙ, ওজন, উচ্চতা, দাঁত, জাত, দাম, বয়স এবং মুঠোফোন নম্বর দেওয়া থাকবে।’
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সিরাজগঞ্জের খামারিরা। করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় সিরাজগঞ্জে বিভিন্ন খামারে। অনলাইনে পশু কেনাবেচার কারণে করোনা সংক্রমণ কমার ঝুঁকির পাশাপাশি খামারিরা ন্যায্য দাম পাবে বলে আশা সংশ্লিষ্টরা। চাহিদার চাইতেও বেশি গরু রয়েছে খামারগুলোতে। যারা হাটে যাবেন না তাদের জন্য অনলাইনে পশু কেনার ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন।
বিভিন্ন ধরনের ও ওজনের গরুর ছবি থাকবে অনলাইনে। পছন্দ মতো সহজেই গরু কিনতে পারবে ক্রেতারা।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান ভূইয়া বলেন, ‘গরু কিনতে এ বছর হাটে যেতে হবে না। ঘরে বসে মানুষ এবার অনলাইনের মাধ্যমে কোরবানির পশু কিনতে পারবে। প্রাণিসম্পদ ও জেলা প্রশাসন এ লক্ষ্যে কাজ করছে। এতে করে পাইকার ও দালালরা ক্রেতাদের ঠকাতে পারবে না। আর মহামারি করোনা ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পাবে মানুষ।’