Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

পহেলা বৈশাখে উদ্বোধন, বাণিজ্যমেলা পূর্বাচলে

বাণিজ্যমেলা এবার শেরেবাংলা নগরে নয়, পূর্বাচলে মেলার নিজস্ব ও স্থায়ী স্থাপনায় অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য বছরের মতো ইংরেজি বছরের প্রথম দিনের বদলে মেলার উদ্বোধন হবে পহেলা বৈশাখে। অর্থাৎ ২০২১ সালের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরু হবে ১৪ এপ্রিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে মাসব্যাপী এই মেলার উদ্বোধন করবেন।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। এছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত ২৫তম বাণিজ্যমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন ২০২১ সালের ২৬তম বাণিজ্যমেলা পূর্বাচলে নতুন শহরে বাস্তবায়নাধীন বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিউশন সেন্টারে (বিসিএফইসি) অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæতি রক্ষায় নানা জটিলতা কাটিয়ে করোনা সমস্যা মোকাবিলা করে সেখানেই মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। অক্টোবরের মধ্যে মেলা স্থাপনা হস্তান্তরের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে তা কতটুকু সম্ভব হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

মেলার উদ্বোধন পহেলা জানুয়ারিতে না করার কারণ জানতে চাইলে ইপিবি সূত্র জানিয়েছে, করোনার কারণে নির্ধারিত সময়ে এই মেলা করা যাচ্ছে না। কারণ গত ২৫ মার্চের পর থেকে দেশে লকডাউনে সব কাজকর্ম বন্ধ ছিল। নতুন ভেন্যু হওয়ার কারণে প্রস্তুতি কাজ কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। এ ছাড়াও আসন্ন শীতে করোনা দ্বিতীয় দফায় আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে। সবদিক বিবেচনা করেই ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা পেছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরিচালনা পর্ষদ।

জানা গেছে, ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল নিউ টাউনের ৪ নম্বর সেক্টরের ৩১২ নম্বর রোডের ০০২ নম্বর প্লটে নির্মাণ করা হচ্ছে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার। ইপিবি জানিয়েছে, মোট ৩৫ একর জমির ওপর নির্মাণাধীন এই সেন্টারে আধুনিক কার পার্কিং, সম্মেলন কক্ষ, সভাকক্ষ, প্রেস সেন্টার, অভ্যর্থনা কক্ষ, বাণিজ্য তথ্যকেন্দ্র, আধুনিক সুবিধাসংবলিত ডরমিটরি থাকবে। এ ছাড়া এক্সিবিশন সেন্টারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক সিসি টিভি, আধুনিক ব্যবস্থাসহ বিদ্যুতের নিজস্ব সাব সেন্টার, সার্ভিস রুম, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, কালভার্ট ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত জমির রেজিস্ট্রেশন পাওয়া যায়নি। রাজউক জমির রেজিস্ট্রেশন করে দেয়নি। অথচ অবকাঠামোসহ অনেক কিছুই নির্মাণকাজ শেষ করা হয়েছে। জমির রেজিস্ট্রেশন না পাওয়ার কারণে কিছু জটিলতা দেখা দিলেও তা সমাধানে বেগ পেতে হবে না বলে জানিয়েছে মেলা আয়োজক কর্তৃপক্ষ ইপিবি। আগামী ডিসেম্বর মাসে পূর্বাচলের ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণ’ কাজ সম্পন্ন করার কথা রয়েছে। এই সেন্টারটি পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে সরকারি তহবিলের প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ফাইভ স্টার হোটেল তৈরি করা হবে। যেখানে বিদেশিরা এসে থাকতে পারবেন। সেই সঙ্গে তৈরি হবে আধুনিক কনভেনশন সেন্টার। এ জন্য ৬ একর জমি পাওয়া গেলেও মামলাসহ নানা জটিলতায় এখনো সেই জমি রাজউক বুঝিয়ে দিতে পারেনি।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পেলেও জমি না পাওয়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শুরু করা যায়নি। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) পূর্বাচল উপ-শহরে মোট ২০ একর জমি বরাদ্দ দেয়। সে অনুযায়ী ডিজাইনও করা হয়। কিন্তু ভ‚-গর্ভস্থ কার পার্কিং নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। ফলে ডিজাইন পরিবর্তন করে ওপরে কার পার্কিং করা হয়। এ অবস্থায় ২০১৫ সালের ৪ আগস্ট আবারও সংশোধিত প্রকল্পটি একনেক অনুমোদন দেয়। সর্বশেষ প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ৭৯৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে চীনের অনুদান ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং সরকারি তহবিলের ১৭০ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে প্রকল্পর জন্য অতিরিক্ত ১৫ একর ভ‚মি অধিগ্রহণ, নতুন নতুন স্থাপনা নির্মাণ, সেন্টারের এলাকা বাড়ানোসহ সেন্টারের রক্ষণাবেক্ষণসহ বিভিন্ন ব্যয় বাড়িয়ে ধরা হয়েছিল এক হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

এদিকে ইপিবি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্থায়ী বাণিজ্যমেলা কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ প্রায় ৯৮ শতাংশ শেষ। তাই শতভাগ শেষ করতে সময় কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। জমি সংক্রান্ত জটিলতা প্রসঙ্গে ইপিবির মহাপরিচালক মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, রাজউকের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জটিলতা কেটে যাবে। সমস্যাগুলোরও সমাধান হবে।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top